শেখ আদুল্লাহ আনোয়ারা(চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৪ টি ইউনিয়ন ও কর্ণফুলী উপজেলার একটি ইউনিয়নে বন্যহাতি লোকালয়ে হানা দেয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে স্থানীয়দের।
এদের উপদ্রবে বসতবাড়িতে ভাঙচুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি আতঙ্ক নেমেছে স্থানীয়দের মাঝে। তাঁরা বলছেন, বনাঞ্চলে খাবার সংকট থাকায় লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতি। তবে স্থানীয়দের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এই ইস্যুতে নীরব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রতিরাতেই ঘটছে ভাঙচুর-তান্ডবের ঘটনা।
দেয়াং পাহাড়ে অবস্থানরত হাতি ২টি বণ্যহাতি চার বছর ধরে প্রতি রাতে আশপাশ এলাকায় তান্ডব চালিয়ে আসছে। এতে ৮ জনের প্রাণহানি ও কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির পরও বন বিভাগ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে বন বিভাগ হাতির তান্ডবের কারণ হিসেবে পাহাড় কাটাকে দায়ী করে স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলার দেয়াং পাহাড়ে ২টি বন্যহাতি গত ৪ বছর ধরে অবস্থান নেয়। রাতে খাবারের সন্ধ্যানে হাতি ২টি বৈরাগ ইউনিয়নের দেওয়ান বাজার, গুয়াপঞ্চক, খাঁনবাড়ী, মোহাম্মদপুর, বদলপুরা, বন্দর, বারশত ইউনিয়নের কবিরের দোকান, পশ্চিমচাল, কান্তিরহাট, বটতলী ইউনিয়নের জয়নগর, ছিরাবটতলী, গুচ্ছগ্রাম, জয়নালপাড়া ও বারখাইন ইউনিয়নের হাজীগাঁও গ্রামে বটতলী ইউনিয়নের গ্রামে এবং কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের খিলপাড়া, খতিবপাড়া, মাইজপাড়া, দৌলতপুর, দক্ষিণ শাহমীরপুর এলাকায় লোকালয়ে নেমে এসে তান্ডব চালায়।
বন্যহাতির তান্ডবে এ পর্যন্ত ৮ জনের প্রাণহানি, অর্ধশতাধিক মানুষ আহতসহ কোটি টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। গত (৫ই আগষ্ট) আমান উল্লাহ পাড়া গ্রামের কৃষক এয়াকুব আলি,আবদু রহমান,সৈয়দ নূর সহ আরও অনেকের ধান ক্ষেত নষ্ট করে ফেলে এবং গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগষ্ট) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ৫নং বরুমচড়া ইউনিয়ন থেকে ৪নং বটতলী ইউনিয়ন হয়ে পরী বিলের মধ্য দিয়ে ২নং বারাশাত ইউনিয়নের লোকালয়ে প্রবেশ করে এই বন্য হাতি।
এসময় আমনের ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয় বলে জানান প্রত্যেক্ষ্যদর্শীরা। বিভিন্ন স্থানে রাতভর পাহারাও দেয় লোকজন। প্রশাসন ও বন বিভাগকে হাতির বিষয়টি অবগত করলেও তারা কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়েই চলে যায় বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। বৈরাগ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সোলমান বলেন, পাহাড়ে খাবারের সংকট হওয়ায় এলাকায় বন্যহাতি খাবারের সন্ধানে এসে ব্যাপক তাণ্ডব চালাচ্ছে। সম্প্রতি এ অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে আরও।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল রহিম জানায়, বণ্যহাতির ভয়ে রাতভর পাহারা দেয় গ্রামবাসী। এর পরও হাতি ২টি বসতবাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। ৮ জন লোকের প্রাণহানির পরও বন বিভাগ স্থায়ী কোন সমাধান না করায় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি জানায়। এ বিষয়ে বনবিভাগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ কর্মকর্তা মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি পাহাড় ও গাছ কাটার কারণে খাবারের খোঁজে হাতিগুলো লোকালয়ে চলে আসে। একটা টিম এ বিষয় কাজ করছে ও অচিরেই এর একটা সমাধন হবে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।