তিন প্রজন্মম মানুষের বাড়ি বাড়ি, পায়নি প্রধান মন্ত্রীর দেওয়া উপহারের বাড়ি।
এসএম স্বাধীন, শরীয়তপুর প্রতিনিধি: নানি থেকে নাতিন, দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে অন্যের বাড়িতেই তাদের বসবাস নানি থেকে নাতিন ৭০ বছর ধরে অন্যের বাড়িতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শরীয়তপুরের কাগদী গ্রামের ভূমিহীন ময়ুরীর পরিবার। কাগদী গ্রামের বিভিন্ন পরিত্যক্ত বাড়িতে ময়ূরীর নানি থেকে শুরু করে ময়ূরীও থাকছে অন্যের বাড়িতে। ময়ূরীর নানি মানুষের বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
ঝিয়ের কাজ করে মেয়ে আছিয়াকে বিয়ে দেন পরে আছিয়ার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন এক মেয়ে ময়ূরী। আছিয়ার পরিবার গরিব হওয়ায় তাকে ছেড়ে চলে যায় তার স্বমী। আছিয়ার মা’র বয়স হয়ে যাওয়ার পরে আছিয়া মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে মেয়ে ময়ূরীকে ১০ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ান। টাকার অভাবে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয় না ময়ূরীর। পরে ময়ূরী নিজের ইচ্ছায় গোপনে কাগদী গ্রামের শাহজাহান খান নামে এক জনকে বিয়ে করেন। সেই ঘরে ময়ূরীর এক পুত্র সন্তান হয়। কিছুদিন পরে ময়ূরীকে তালাক দেয় তার স্বামী শাহজাহান খান। এর মধ্যে ময়ূরীর নানিও মৃত্যুবরণ করেন।
ময়ূরীর মা আছিয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগ-শোক আর বয়সের ভারে মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করতে পারছেন না। ময়ূরী অন্যের বাড়িতে কাজ করে যেটুকু খাবার যোগাড় করেন তা দিয়ে খেয়ে-না খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছে পরিবারটি। অন্যের বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করা পরিবারটিকে দেখার মতো যেন কেউই নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার শরীয়তপুরে অনেকে পেলেও এই পরিবারের ভাগ্যে এখনো জোটেনি একটি বাড়ি একটি ঘর। আছিয়া জানান, আমার মা থেকে শুরু করে দীর্ঘ প্রায় ৭০ বছর ধরে এই কাগদী গ্রামে অন্যের বাড়িতেই তাদের বসবাস। তার এক মেয়ে ও এক নাতি।
এই নারী আরও বলেন, বয়সের কারণে আমাকে কেউ কাজে নিতে চায় না। শুনেছি সরকার নাকি গৃহহীনদের ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা কার কাছে গেলে সেই সহযোগিতা পাব জানি না। স্থানীয়রা জানান ‘দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটি অন্যের বাড়িতে বাড়িতে থাকছেন। শুনেছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাদের বাড়ি নেই গৃহহীন তাদের বাড়ি ও পাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। এমন একটি বাড়ি ও ঘর পেলে পরিবারটি একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র এ্যাড. পারভেজ রহমান জন বলেন, ‘আমাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন বলেই জনগণের ভোটে ১৬ জানুয়ারি ২০২১ নির্বাচিত হয়েছি। আমি জনগণের পাশে থেকে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ। এই অসহায় পরিবারটির কথা আপনাদের কাছে জানলান আমি খোজখবর নিয়ে তাদেরকে একটি সরকারি ঘরসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার ব্যাপারে আমার জোর প্রচেষ্টা থাকবে।’ শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হোসেন বলেন, মুজিববর্ষে সরকার যাদের বাড়ি ও ঘর নেই তাদের জন্য বাড়ি ও পাকা ঘরের ব্যবস্থা করছে। ময়ূরীর পরিবারের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।