পাশের বাসার পাঁচতলা নির্মাণাধীন ভবন থেকে লোহার খণ্ড মাথায় পড়ে মারা যাওয়া নাহার বেগমের স্বামী ৫ লাখ টাকায় ভবন মালিকের সঙ্গে আপস করেছেন। ঘটনার একদিন পর ময়নাতদন্ত শেষ করে দাফনের আগেই দুই পক্ষ বসে এমন সিদ্ধান্তে আসেন।
নিহতের স্বামী গাড়ি চালক আনোয়ার হোসেন পল্টু বলেন, এসব ঘটনায় ক্ষতি পূরণের একটা ব্যাপার থাকে। আমাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আশ্বাস দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ হিসেবে কয়েক লাখ টাকা দেবেন।
এর আগে শনিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরে সাদেক খান রোডের সাকসেস মডেল হাই স্কুলের গতিতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, এ ঘটনার একদিন পর রবিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নিহতের স্বামী আনোয়ার হোসেন পল্টু বাদী হয়ে একটি দায়িত্ব অবহেলার মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বাড়ির মালিক সপিয়া (৬০) ও তার স্বামী আলী আকবর (৬৫) এবং নির্মাণাধীন ভবনের ঠিকাদারকে আসামি করা হয়েছে।
৫ লাখ টাকায় দফারফা বিষয়ে কোনও কিছু জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, আমাদের কাছে মামলা করেছে। মামলার তদন্ত করে রিপোর্ট দেবো। তারা নিজেরা আপস হয়ে আদালতে কী বলবেন সেটা তাদের বিষয়।
এদিকে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার এর পাশে সাদেক খান রোডে সাকসেস মডেল হাই স্কুলের গলির মুখে এই নির্মাণাধীন পাঁচতলা ভবন। যার চারতালা আগেই নির্মাণ করা ছিল। নতুন করে পাঁচতলার কাজ চলছে। ভবনটির গোড়াই টিনশেডের কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। নিচ থেকে উপরে রড উঠাতে। সেখান থেকেই রডের এক খণ্ড বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকা নাহার বেগম এর মাথায় পড়ে।
সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ভবনটি দায়িত্বে ছিলেন একজন ম্যানেজার। যিনি ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান। মালিক অন্য বাসায় থাকায় পুলিশ গিয়েও কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেনি।
গলিটির মুখে স্থানীয় মুদির দোকানদার সরদার আলী (৬০) বলেন ,আজ ময়নাতদন্ত শেষে লাশ এখানে রেখে ভবনটির মালিক সাপিয়া তার স্বামী আকবর আলী ও তাদের তিন ছেলে মেয়ের সঙ্গে আনোয়ার হোসেন পল্টুর আলোচনা হয়। আমাদের সবার সামনে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত হওয়ার পর রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
পরে নির্মাণাধীন ভবন মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা এই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। নিহতের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়।