বরগুনার আলোচিত রিফাত হত্যা মামলায় রায় দিয়েছে আদালত। এতে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিন্নি সম্পর্কে নানা তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই মিন্নির বেপরোয়া জীবনযাপন শুরু হয়েছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর। বাবা-মায়ের অধিক প্রশ্রয়ে আজকের এ পরিণতি।
এলাকাবাসী জানায়, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে মিন্নি অনেকের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় নয়ন বন্ড ও রিফাত শরীফ ছিল তার শিকার। সেই প্রেম সূত্র থেকেই রিফাত শরীফকে হত্যা করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা।
বুধবার দুপুরে আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। এ মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে বাকি চারজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
এর আগে, এ দিন সকাল ৯টায় বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের সঙ্গে মিন্নি আদালত প্রাঙ্গণে আসেন। এরপর কারাগার থেকে আট আসামিকে আদালতে আনা হয়। রায়ের পর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ২টা ৫০ মিনিটে মিন্নিকে আদালত থেকে ডিবি পুলিশের একটি কালো মাইক্রোবাসে কারাগারে নেয়া হয়। এর ১০ মিনিট পর পুলিশের প্রিজন ভ্যানে কারাগারে নেয়া হয় বাকি মৃত্যুদণ্ড-প্রাপ্তদের।
দেশের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে মিন্নির ফাঁসি কার্যকর হবে!
২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। এরপর বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ছাড়েন তারা। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিনই মারা যান।
ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। একইসঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি একই মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বরগুনার শিশু আদালত।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন।