দেশের তিন জেলায় ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে শনিবার (০৪ মে) সকাল সাড়ে আটটার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার দুর্ঘটনায়। রাত আড়াইটার দিকের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে একই পরিবারের তিনজনের। এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুরে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে দুই নির্মাণ শ্রমিক এবং নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাঙা মেশিনের চাপায় এক এনজিও কর্মী নিহত হয়েছেন। প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লরিচাপায় একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার বাউশিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আলমগীর, তার ছেলে জহির এবং আলমগীরের মামি রাহেলা বেগম। তাদের বাড়ি চাঁদপুরে। দুর্ঘটনায় আহত দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গাজীপুর: শনিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে জেলার শ্রীপুর উপজেলায় ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১১ শ্রমিক।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কুদ্দুস দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রাসেল মিয়া (২৫), আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ের স্বামী আবু সুফিয়ান (২৫)।
শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বেলাল আহমেদ জানান, একটি পিকআপে করে মিক্সার মেশিন নিয়ে ১৩ শ্রমিক ঢালাইয়ের কাজ করতে শ্রীপুর থেকে মাওনা যাচ্ছিলেন। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পিকআপটি শ্রীপুর-মাওনা আঞ্চলিক সড়কের ভাংনাহাটি কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে পৌঁছলে পেছন থেকে একটি ড্রাম্প ট্রাক সেটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপটি উল্টে গেলে মিক্সার মেশিনের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই রাসেল মিয়া নিহত হন। আহত হন ১২ জন। তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সুফিয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এসআই মো. কুদ্দুস জানান, দুর্ঘটনার পর ট্রাকটি জব্দ করা হলেও এর চালক পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নওগাঁ: শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নওগাঁর আত্রাইয়ে ইটভাঙা মেশিনের চাপায় সঞ্জয় কুমার নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। তিনি এনজিও কর্মী। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। উপজেলার সাহাগোলা-শিমুলিয়া রাস্তার রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত সঞ্জয় আত্রাইয়ের আইডিএফ এনজিওতে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রাজশাহী বাঘা উপজেলায়।
নিহত সঞ্জয় কুমারের সহকর্মী শামীম জানান, সঞ্জয় কুমার আইডিএফ এনজিওর আত্রাই শাখায় ফিল্ড অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। সকালে বাড়ি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে অফিসে যাচ্ছিলেন। এ সময় ওভারটেক করার সময় একই দিক থেকে আসা একটি ইটভাঙার মেশিন অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যায়। আহত হন আরও কয়েকজন।
আত্রাই থানার ওসি জহুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।