প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে খুশিতে ছেলের নাম রাখেলন মুজিবুর রহমান
এম ওসমান : প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে শার্শার হাফিজা বেগম আনন্দে আত্যহারা হয়েছে। তাই উপহারের ঘরে সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানের নাম রাখেলন মুজিবুর রহমান। বললেন তার সুখ-দুঃখের কথা। ফেললেন আনন্দাশ্রু। বললেন দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের লাখো ঘরে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হোক।
স্বপ্ন ছিল ছোট একটি পরিবার। একটি সুন্দর বাড়ীর। সে বাড়িতে সকলকে নিয়ে সুখে-দুঃখে বসবাস করব। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, স্বামী পেলাম, ঘর পেলাম। তবে অন্যের জমি ভাঙ্গাচোরা ঘর। বাপের ঘর থেকে স্বামীর ঘরে এলাম। ঘর তো নয়, ভ্যান্না পাতার ছাওনি। একটু বৃষ্টি হলেই ঘর জুড়ে কাদায় ভরে যেত। একটু ঝড় বাতাস বয়লেই ঘর নড়বড় করত। তাও আবার অন্যের জমিতে ঘর। অনেক আশা ছিল, গ্রামের আরো ১০ গৃহস্তের মত আমাদের একটি ঘর হবে নিজ জমিতে।
স্বপ্ন দেখতাম আর ভাবতাম, যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেখানে আবার গৃহস্থ বাড়ী। এরইমধ্যে আবার আমি গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলাম। ভাবতাম এ ভাঙ্গা ঘরে আমার সন্তান রাখবো কোথায়। হঠাৎ একদিন চেয়ারম্যান সাহেব জানালো তোমাদের পাকা ঘরসহ জমি হবে । তাও নাকি আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিবে। খবরটা শুনে বুকটা ভরে গেল। আমার স্বামীর সাথে বললাম, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জমিসহ পাকা ঘর দিচ্ছে।
আমাদের আনন্দের আর সীমা রইল না। কিছু দিনের মধ্যেই জমিতে ইট পড়তে দেখে পেটে হাত দিয়ে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমার যদি ছেলে হয়, যে আমাদের ঘর ও জমি দিচ্ছে তার বাবার নামেই আমার ছেলের নাম রাখবো। আমার সপ্ন সত্যিতে পরিনত হলো। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে ঘরে উঠেই ১মাসের মধ্যে আমার একটি ছেলে সন্তান হল। তাই তার নাম রেখেছি মুজিবুর রহমান। কথা গুলি বলছিল শার্শা উপজেলার বালুন্ডা গ্রামের হত দরিদ্র আসাদুল হকের স্ত্রী হাফিজা বেগম। এ সময় তার দু’চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল আনন্দাশ্রু।
সে কাঁদছে কেন জিজ্ঞেস করতেই আরো ফুফিয়ে কাঁদতে লাগলো। আর বললো, শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে আজ আমাদের মাথা গোজার ঠায় হলো। তিনি যেন শত বছর বাঁচে আমাদের মত অসহায়দের জন্য। লাখো ঘরে শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম হোক। এ সময় হঠাৎ আগমন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লাল্টু মিয়ার। তারা সংবাদ কর্মীদের দেখে বললেন, আপনারা এলেন যখন তখন আমাদের এ প্রকল্পের কাজ গুলি একটু দেখে যান। আমরা উলাশী, বালুন্ডা ও কায়বা ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো দেখলাম।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানও প্রকল্পের ঘরগুলো পরিদর্শন করে কাজের মানে যেন কোন ত্রুটি না হয় সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লাল্টু মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যেভাবে ঘরগুলো করার নির্দেশনা দিয়েছে, নকশা ঠিক রেখে আমরা সেভাবেই করেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা বলেন, গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার কাজটি আমরা উপজেলা কমিটির মাধ্যমে করেছি এবং এ কাজে আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু। এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি জাতির জনকের জন্মশত বার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলি দেশসেরা করার জন্য। সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন এ প্রকল্পের কাজ মনিটরিং করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিন্নমুল মানুষের মুখে হাসি দেখতে চাই।