ফরিদেুরে শ্বশুরকে হত্যার দায়ে জামাইর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ
জুয়া খেলতেন জুয়াড়ি জামাই। অবশেষে মেয়েকে জুয়াড়ি জামাই কাছ থেকে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছেদ করার ক্ষোভে শ্বশুর তোতা মিয়াকে হত্যা মামলায় জামাই আলামিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডর রায় প্রদান করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫জুন) দুপুর একটার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।
জামাতা আলামিন সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নয়রশি গ্রামের বাসিন্দা। শ্বশুর তোতা মিয়া একই উপজেলার ভাষাণচর ইউনিয়নের গফুর মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা। গত ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে বারোটার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে তোতা মিয়ার মেয়ে আজুফা বেগম (৩৮) এর সাথে আলামিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আলামিন বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করে আসছিল। সর্বশেষ জুয়া খেলা ও মাদক নেশায় চরম ঝুকে পড়ে আলামিন। বিভিন্ন সময়ে আজুফার বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে স্ত্রীর উপর চাপ প্রয়োগ করে আসছিল।টাকা আমতে আজুফা অস্বীকৃতি জানালে তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আলামিন। মেয়ের উপর নির্যাতন করার খবর শুনে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি ফরিদপুরের নোটারি পাবলিক এর মাধ্যমে আলামিনকে একতরফা তালাক দেয় আজুফা।
এ ঘটনা জানার পরে আলামিন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শ্বশুরবাড়িতে এসে আলামিন ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে বারোটার দিকে তার শ্বশুর তোতা মিয়াকে টিউবয়েলের মাথা দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। ওই দিনই বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যায়।
পরে নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ২২ জানুয়ারি আলামিন ও অজ্ঞাতনামা আরও দুই/ তিনজনকে আসামি করে সদরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জসিট জমা দেয়। গতকাল আদালত শ্বশুর তোতা মিয়া হত্যা মামলায় জামাই আলামিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড রায় প্রদান করে।