বরিশালে আ.লীগ নেতার গলায় জুতার মালা-থানায় মামলা
আস্থা ডেস্কঃ
বরিশালে বিদায়ী সিটি মেয়রের ছবি নামানোর অজুহাতে বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও নগরীর সোনার বাংলা মোটরসের স্বত্বাধিকারী মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আটকিয়ে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে রাখায় শাস্তিস্বরূপ গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। একটি ভিডিওতে ওই ব্যবসায়ীকে বাধ্য করা হয়েছে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি দোকান থেকে নামিয়ে রাখা অন্যায় হয়েছে বলতে। অপরটিতে শোনা গেছে, ছবি নামানোর শাস্তিস্বরূপ শিক্ষা দেওয়ার কথা।
মারধরের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু বলেন, বরিশালের ১১নং ওয়ার্ডস্থ বান্দ রোডে সোনার বাংলা মোটরস নামে আমার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে।২২ আগস্ট মোবাইলে আমাকে ১৫নং ওয়ার্ডস্থ শহীদ আব্দুর রহিম স্মৃতি পাঠাগার ক্লাবের পশ্চিম পাশের কক্ষে ডেকে নেওয়া হয়। বিকেল ৩টার দিকে সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুম আটকিয়ে সাব্বির, আব্দুল, কাওছার, সোহাগ মারধর শুরু করে। এর মধ্যে একজন বিএনপির সমর্থক ও বাকি চারজন সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারি।
বাচ্চু আরও বলেন, আমাকে রুমের মধ্যে আটকে ৮ থেকে ৯ দফায় মারধর করা হয়। মারধর করে তারা আমাকে বলতে বলে যে আমার ব্যক্তিগত অফিস থেকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি। ওরা যতবার এই কথা বলতে বলেছে, ততবার আমি বলেছি যে, সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে আমি নামাইনি। শেষে আরও মারধরের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে ওদের শিখানো কথা বলি যে, সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি এবং তা অন্যায় হয়েছে।
মাইনুদ্দিন খান বাচ্চু বলেন, আমি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমাকে হেনস্তা করার জন্য কাওছার জুতার মালা বানিয়ে দেয় আর সোহাগ আমার গলায় পরিয়ে দেয়। আমি দুই, তিনবার ফেলে দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে আরও মারধর করে। শেষে আমি জ্ঞান হারালে গলায় জুতার মালা পরিয়ে চেয়ারে বসিয়ে ভিডিও করে। এর আগে মঈন জমাদ্দার কয়েক দফায় হুমকি দিয়েছে, আমি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর পক্ষে কাজ করলে বরিশালে থাকতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে ফিরলে আমাকে মারধর করবে। আমার কক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ছবি আছে। যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি এবং আমার অফিস সোনার বাংলা মোটরসে বিভিন্ন নেতা আসেন। এই ইস্যু কাজে লাগিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে নামিয়ে রেখেছি। এই অভিযোগ তুলে আমাকে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।
মামলার আসামি ও ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার বলেন, মনিরুজ্জামান খান বাচ্চুর যে ভিডিও ছড়িয়েছে তা আমি ছড়িয়েছি, এটা আমি ধারণ করেছি এটা সত্য। কিন্তু জুতার মালা পরানোর যে ভিডিও তার আগের ভিডিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তাছাড়া ওখানে সাদিক আব্দুল্লাহর নাম বলাটাও আমার উচিত হয়নি। এটা আমি ভুল করেছি। এজন্য সাদিক ভাইও আমার ওপরে খুব ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আরাফাত হাসান বলেন, মামলা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে ব্যবসায়ীর গলায় জুতার মালা পরানোর দু’টি ভিডিও ইতোমধ্যে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।