বর্তমান সরকারের অধীনে মানুষের জানমাল, ইজ্জত কোনো কিছুই নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবস্থান কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে দেশের মানুষের সম্মান মাটির সঙ্গে মিশে গেছে
সরকারি দলের দুর্বৃত্তদের হাতে সিলেট এম সি কলেজে নববধূ ধর্ষণ, বেগমগঞ্জে গৃহবধূর নারকীয় বিভৎসতাসহ দেশব্যাপী অব্যাহত নারী ও শিশুর উপর ঘৃণ্য সহিংসতার প্রতিবাদে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির আয়োজন করে নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
সরকারের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, মামলা, হামলা করে ভেবেছিল বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। কিন্তু গতকালের সমাবেশে, আজকের সমাবেশ প্রমাণ করে বিএনপির মতো দলকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ করে, রুখে দাঁড়ায়, একদিন অত্যাচারীর পতন ঘটে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সব টাকা খেয়ে ফেলেছে তারা। দেশের যতগুলো ব্যাংক ছিল সব খালি করে ফেলেছে। বড় বড় অফিস-আদালত, যেসব প্রতিষ্ঠান টাকা ইনকাম করে সেখান থেকে টাকা লুট করেছে। দেশের যত ব্যবসা-বাণিজ্য সব জায়গা থেকে টাকা লুট করেছে। সবকিছুর দাম বাড়িয়েছেন, মানুষ খুন এবং গুম করেছেন। বিরোধী দলকে মাঠে রাখবেন না সেই রকম ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু যতই অত্যাচার-জুলুম করেন মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানীতে বিক্ষোভের মহানগর উল্লেখ করে মান্না বলে, সারাদেশ বিক্ষোভের দেশ। যেটা হয়েছে আর নয়। যতদূর হয়েছে এ পর্যন্তই। এরপরে এটা চলবে না। ৩০ ডিসেম্বরের দিনের ভোট রাতে করেছেন, প্রশাসন দিয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ডাকাতি করেছেন। মনে করেছেন, ডাকাতদের দেশ শাসন করবেন এজন্য দলের মধ্যে পুলিশ পালেন, দলের মধ্যে হাইজাকার পালেন, দলের মধ্যেই লুটেদের পালেন, ডাকাত পালেন, ধর্ষক পালেন। আওয়ামী লীগ এখন ডাকাতদের দল, লুটেদের দল, ধর্ষকদের দল।
ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম এ নেতা বলেন, যখন সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদ শুরু করেছে তখন আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ রাস্তায় নেমেছে। তারা বলতেছেতে তারাও ধর্ষকদের বিচার চাই। ফোর-টোয়েনটি কাকে বলে? এখন তারা এসে বলছে আমরাও প্রতারকদের বিচার চাই, ধর্ষকের বিচার চাই। তার মানে সরকারের গতিতে টান লেগেছে। বুঝতে পেরেছে এই টানে গাড়ি চলে যেতে পারে। অর্থাৎ নানান রকমের টালটি-বালটি করে আন্দোলনকে নষ্ট করতে চায়।
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, এ আন্দোলন চালাতে হবে, থামা যাবে না। থামলে দেখবেন তাদের চেহারা বদলে যাবে। ওদের পদত্যাগ চাই। এ সরকারের অধীনে মানুষের জানমাল, ইজ্জত কোনো কিছুই নিরাপদ নয়।
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবা বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অংগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী অংশ নেন।