চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানাধীন সুপারিওয়ালাপাড়ায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক ছাত্রলীগ নেতা চান্দু মিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে নগরীর পতেঙ্গা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) এএএম হুমায়ুন কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সুপারিওয়ালাপাড়ায় তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক চান্দু মিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত অন্য তিনজন হলো- ধর্ষিতার বান্ধবী নুরী আক্তার (২০) ও তার স্বামী মো. অন্তর (২২) এবং চান্দু মিয়ার বন্ধু রাজিব হোসেন (২০)। তারা ধর্ষক চান্দু মিয়ার সহযোগী। চান্দু মিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগ নেতা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডবলমুরিং থানার এসআই নুরুল ইসলাম জানান, চান্দু মিয়া ক্ষমতাসীন রাজনীতির দলের সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্নভাবে সে এলাকায় ক্ষমতাশালী। তার চার তলা বাড়িতে ভাড়া থাকেন নুরী আক্তার ও তার স্বামী। নুরী আক্তার বিভিন্ন সময় চান্দুকে তরুণী জোগান দিয়ে আসছিল। সে নিজেও অসামাজিক কাজে লিপ্ত। এরই ধারাবাহিকতায় ওই স্কুলছাত্রীকে চান্দু মিয়ার হাতে তুলে দেন নূরী।
গত বৃহস্পতিবার ফেনী থেকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ফুফুর বাসায় বেড়াতে আসেন অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী। দশম শ্রেণি পড়ুয়া ফুফুর এক মেয়ের সঙ্গে গত রোববার সন্ধ্যায় বেড়াতে যান ওই স্কুলছাত্রী। তাদের সঙ্গে দেখা হয় নুরী আক্তার নামে এক তরুণীর সঙ্গে। নূরী স্কুলছাত্রীর ফুফাতো বোনের বান্ধবী। নুরি তাদের আগ্রাবাদের সুপারিওয়ালা পাড়ার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে নিজের কক্ষে না নিয়ে চান্দু মিয়ার কক্ষে নিয়ে যান। অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্রীকে চান্দুর কক্ষে জোর করে আটকে রাখা হয়। বাইরে অস্ত্রের মুখে রাখা হয় আরেক স্কুলছাত্রী তার ফুফাতো বোনকে। এরপর বাসার ভেতরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে পাহারায় ছিল নুরী আক্তার। চান্দু মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর নুরী ওই স্কুলছাত্রীকে তার ফুফুর বাসায় পৌঁছে দেয়। কিন্তু বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে স্কুলছাত্রীকে বাসার লোকজন জিজ্ঞাসা করলে তিনি সবকিছু খুলে বলেন।
তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত চান্দু মিয়া গ্রেফতার
তখন তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নেয়া হয়। সেখান থেকে ডবলমুরিং থানায় খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নুরী আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর নুরীর কাছে মোবাইল নিতে এসে গ্রেফতার হন স্বামী অন্তর। চার দিন আগে তাদের বিয়ে হয়।
তবে অন্তর ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে। নুরী আক্তার বন্দর থানার তিন নম্বর ফকিরহাট কাশিম মাঝির বাড়ির মৃত মো. বশিরের মেয়ে। এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে বলে জানান এসআই নুরুল ইসলাম।