বিপদসীমার ওপরে উব্দাখালীর পানি, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল
নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার কংস, ধনু, উব্দাখালী, সোমেশ্বরীসহ বিভিন্ন ছোট বড় নদ-নদীর বাড়ছে পানি। এর মধ্যে কলমাকান্দা উপজেলায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ রোববার (২ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে উব্দাখালী নদীর ডাকবাংলো পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ৬ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।
নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বুধবার থেকে নেত্রকোণাসহ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে ১৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ওই সময়ে নেত্রকোনায় বৃষ্টিপাত হয় প্রায় ৪৫ মিলিমিটার। এতে জেলার ছোট বড় সব নদ-নদীর পানি বেড়ে গেছে। এর মধ্যে রোববার দুপুর ২টার পর থেকে উব্দাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। এছাড়া ওই উপজেলার মহাদেও নদ, বৈঠাখালী, মঙ্গলেশ্বরী ও গণেশ্বরী নদীর পানি বেড়ে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি এসেছে। পানিতে প্রায় ১৭টি পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছচাষিরা।
খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ওবায়দুল হক জানান, কলমাকান্দা-গোবিন্দপুর সড়কের বাউসাম রুমালীর বাড়ি এলাকায় সড়কটির কিছু অংশ পানিতে ভেঙে গেছে। এতে করে সকাল থেকে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। পানি বাড়তি অব্যাহত রয়েছে।
কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঢলের পানিতে উপজেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। জরুরি হট নম্বর খোলা হয়েছে। শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে যোগাযোগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেত্রকোনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সারওয়ার জাহান বলেন, পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কংস, সোমেশ্বরী, ধনুসহ অন্য বড় নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে সুরমা, যাদুকাটা, সারি গোয়াইন, নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চলের স্বপ্লমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।