দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী তারিকুজ্জামান সানির মৃত্যুর ঘটনায় দোহার থানায় দায়ের করা মামলায় তাঁর ১৫ বন্ধুকে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার ঢাকার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফুজ্জামান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন শরীফুল হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সেজান আহম্মেদ, রুবেল, সজীব, নুরজামান, নাসির, মারুফ, আশরাফুল আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, নোমান, জাহিদ, এ টি এম শাহরিয়ার মোমিন, মারুফুল হক মারুফ ও রোকনুজ্জামান ওরফে জিতু।
এর আগে শনিবার বিকেলের দিকে তাঁদেরকে আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুতুবপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুল আলম। অন্যদিকে রিমান্ডের আবেদন বাতিলপূর্বক প্রত্যেকের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের তিন দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে দেন আদালত।
গত বৃহস্পতিবার একসঙ্গে ১৬ জন যুবক দোহারের মৈনট ঘাটে পদ্মা নদীতে ঘুরতে যান। সন্ধ্যার পর সানি নামে ওই বুয়েট শিক্ষার্থী নদীতে পরে নিখোঁজ হন। রাতেই স্থানীয় লোকজনের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দোহার থানা-পুলিশ। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টায় সানির মরদেহ উদ্ধার করে ডুবুরি দল। সুরতহাল শেষে ওই বুয়েট শিক্ষার্থীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
শুক্রবার রাতে সানির বড় ভাই হাসানুজ্জামান একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় আসামি করা হয় সানির সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া ১৫ বন্ধুকে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বুয়েটের শিক্ষার্থী সানিসহ ১৬ যুবক একসঙ্গে ঘুরতে যান মিনি কক্সবাজার নামে খ্যাত দোহারের মৈনট ঘাটে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বন্ধুরা তাঁকে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন।
শুনানিতে আসামিরা আদালতকে বলেন, মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পা পিছলে পড়ে যান সানি। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের চেষ্টায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বুয়েটের ছাত্র সানিকে মৈনট ঘাটের পন্টুন থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামালও রিমান্ডে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।