ঢাকা ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo পানছড়িতে পিসিসিপি’র ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত Logo আইনজীবী ও বিএনপি নেতার নাম জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভ Logo ইরানকে সহায়তা করায় ভারতীয়সহ ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা Logo খাগড়াছড়িতে ১৮ বছর পর ধানের শীষের পথ সভায় ওয়াদুদ ভূইয়া Logo নতুন করে পদায়ন করা হলো আরও ৯ ডিসি Logo বাংলাদেশের ১১ জেলাকে সংযুক্ত করে বানাতে চায় ‘গ্রেটার ত্রিপুরা ল্যান্ড’ Logo সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে ভারত-মিয়ানমার, বাংলাদেশ করছে প্রত্যাহার! Logo আ.লীগের আগ্রাসনের প্রতিবাদে পানছড়িতে যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল Logo তাড়াইলে ধলা ইউপি চেয়ারম্যান ঝিনুক গ্রেফতার Logo কিশোরগঞ্জে চবি চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিবকে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ইউনূস ও দুদক-টিউলিপ

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ১১:২৩:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • / ১০৮৮ বার পড়া হয়েছে

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ইউনূস ও দুদক-টিউলিপ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এমপি।

সোমবার ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিসে তিনি বলেছেন, তার সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।

সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা, তার রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিস পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যেখানে আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপের নামও রয়েছে।

এসব মামলার বিষয়ে দুদক ও টিউলিপের মধ্যে শুরু থেকেই ‘চিঠি চালাচালি’ চলছে। তবে টিউলিপের অভিযোগ, মুহাম্মদ ইউনূস বা দুদক এখন পর্যন্ত তার কোনো চিঠির জবাব দেয়নি।

সবশেষ উকিল নোটিসে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে।

নোটিশে স্টেফেনসন হারউড বলছে, এখনও আমরা কিংবা টিউলিপ সিদ্দিক কোনো চিঠির জবাব পাইনি।

“আমরা চিঠিতে স্পষ্ট বলেছি, টিউলিপ সিদ্দিক একটি পরিকল্পিত প্রচারণার শিকার, যার নেপথ্যে রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক। আমাদের চিঠিপত্রে এটা দেখিয়েছি, কেন টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ অসত্য।

সোমবারের উকিল নোটিসে ইউনূসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ইউনূস তুলে ধরেছেন, তার সমালোচনাও করা হয়েছে নোটিশে।

বলা হয়, বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কিনা। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাত করেননি।

টিউলিপ মনে করেন, তার সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে।

প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা।

দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের একাধিক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যেগুলোতে তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলেছিলেন।

নোটিসে বলা হয়, আমাদের প্রত্যাশা ছিল, যুক্তরাজ্যের নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে প্রধান উপদেষ্টা সঠিকভাবে তথ্য যাচাই করবেন। তার এটাও মাথায় নেওয়া উচিত ছিল, দুদকের পক্ষ থেকে যখন তদন্ত চলছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তখন টিউলিপকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করাটা সমীচীন নয়।

টিউলিপ বলছেন, তার সঙ্গে বসে এসব মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেয়েছিলেন ইউনূস।

কিন্তু তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ না করে দুদকের আড়ালে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন, যা আমাদের কোছে টিউলিপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দ্বিতীয় কারণ বলে মনে হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিসের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

নোটিসে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।

দয়া করে এখন এটা নিশ্চিত করুন, যে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসঙ্গতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।

ট্যাগস :

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ইউনূস ও দুদক-টিউলিপ

আপডেট সময় : ১১:২৩:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টায় ইউনূস ও দুদক-টিউলিপ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্রিটিশ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক এমপি।

সোমবার ইউনূস ও দুদক বরাবর পাঠানো এক উকিল নোটিসে তিনি বলেছেন, তার সুনাম ক্ষুণ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।

সেই সঙ্গে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা, বিশেষ করে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা, তার রাজনৈতিক দল এবং দেশসেবার কাজে বিঘ্ন ঘটাতে তারা এসব অভিযোগ তুলেছেন, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান স্টেফেনসন হারউড এলএলপির মাধ্যমে এ নোটিস পাঠিয়েছেন টিউলিপ, যেখানে আগের কোনো চিঠির জবাব না পাওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপের নামও রয়েছে।

এসব মামলার বিষয়ে দুদক ও টিউলিপের মধ্যে শুরু থেকেই ‘চিঠি চালাচালি’ চলছে। তবে টিউলিপের অভিযোগ, মুহাম্মদ ইউনূস বা দুদক এখন পর্যন্ত তার কোনো চিঠির জবাব দেয়নি।

সবশেষ উকিল নোটিসে টিউলিপ বলেন, গত ১৮ মার্চ ও ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৪ জুন একটি চিঠি পাঠানো হয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে।

নোটিশে স্টেফেনসন হারউড বলছে, এখনও আমরা কিংবা টিউলিপ সিদ্দিক কোনো চিঠির জবাব পাইনি।

“আমরা চিঠিতে স্পষ্ট বলেছি, টিউলিপ সিদ্দিক একটি পরিকল্পিত প্রচারণার শিকার, যার নেপথ্যে রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক। আমাদের চিঠিপত্রে এটা দেখিয়েছি, কেন টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ অসত্য।

সোমবারের উকিল নোটিসে ইউনূসের সাক্ষাৎ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টিউলিপের সঙ্গে দেখা না করার যে কারণ ইউনূস তুলে ধরেছেন, তার সমালোচনাও করা হয়েছে নোটিশে।

বলা হয়, বিবিসি রেডিওর সাক্ষাৎকারে ইউনূসের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে দুটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়। প্রথমত, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ না পেয়ে তিনি হতাশ কিনা। দ্বিতীয়ত, টিউলিপের সঙ্গে তিনি কেন সাক্ষাত করেননি।

টিউলিপ মনে করেন, তার সঙ্গে বসার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার দুটি কারণ থাকতে পারে।

প্রথমত, টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা যেসব অভিযোগ তুলেছেন, সেগুলো মিথ্যা।

দ্বিতীয় কারণ তুলে ধরতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের একাধিক সাক্ষাৎকারকে উদ্ধৃত করা হয়েছে, যেগুলোতে তিনি টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলেছিলেন।

নোটিসে বলা হয়, আমাদের প্রত্যাশা ছিল, যুক্তরাজ্যের নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে প্রধান উপদেষ্টা সঠিকভাবে তথ্য যাচাই করবেন। তার এটাও মাথায় নেওয়া উচিত ছিল, দুদকের পক্ষ থেকে যখন তদন্ত চলছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তখন টিউলিপকে নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করাটা সমীচীন নয়।

টিউলিপ বলছেন, তার সঙ্গে বসে এসব মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেয়েছিলেন ইউনূস।

কিন্তু তিনি সেই সুযোগ গ্রহণ না করে দুদকের আড়ালে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন, যা আমাদের কোছে টিউলিপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের দ্বিতীয় কারণ বলে মনে হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ নোটিসের একটি অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টাকেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

নোটিসে টিউলিপ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখন প্রধান উপদেষ্টা ও দুদকের এসব মিথ্যা প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে।

দয়া করে এখন এটা নিশ্চিত করুন, যে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, যদি এই চিঠি এবং আমাদের আগের চিঠিগুলোর যথাযথ জবাব ৩০ জুনের মধ্যে না দেন, তবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তিসঙ্গতভাবেই বিষয়টির ইতি ঘটেছে বলে ধরে নেবেন।