ঢাকা ০১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যরাতে চবিতে শিক্ষার্থী-স্থানীয়রা সংঘর্ষ, আহত-৫০, পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১১০৬ বার পড়া হয়েছে

মধ্যরাতে চবিতে শিক্ষার্থী-স্থানীয়রা সংঘর্ষ, আহত-৫০, পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষ মাইকে ঘোষণা দিয়ে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ৩২ শিক্ষার্থীসহ ৫০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

দেরিতে ভবনে প্রবেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভবনের দারোয়ানের সাথে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে দারোয়ান তাকে মারধর করেন। ঘটনার শিকার ছাত্রী অপর শিক্ষার্থীকে ফোনে জানালে ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয়রা ইট পাটকেল মারতে শুরু করে।

এসময় আইন বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ আহত হন। এরপর উভয়ের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ৩২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতদের মধ্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আল মাসনূনও রয়েছে।

এরমধ্যে চিকিৎসার জন্য ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। এদিকে আহতদেরকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়।

দর্শন বিভাগের ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সময় মতো বাসায় আসি। আজকেও ১২টার মধ্যে চলে আসি। দারোয়ানকে দরজা খুলতে বললে তিনি খুলছিলেন না। পরে জোরে ডাক দিলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। আমি জবাব দিতে গেলে হঠাৎ আমাকে চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমমেটরা নামলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি মারতে থাকেন। এরপর আমার রুমমেট ও আশপাশের স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়ে বলেন, সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যেভাবে পারেন আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করেন। দুই নাম্বারে আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে প্রচুর শিক্ষার্থী আহত।

তিনি আরও লিখেন, সহকারি প্রক্টর কুরবান আলী স্যার, নাজমুল স্যার ও নিরাপত্তা প্রধান রহিম ভাই আহত হন। নিরাপত্তা বাহিনীর অধিকাংশ সদস্য আহত। প্রক্টোরিয়াল বডির গাড়ি, পুলিশের টহলগাড়ি এবং বিশ্ববিদ্যালয় গাড়ি ভেঙে ফেলেছে। আমরা অতিরিক্ত পুলিশ চেয়েছি, যেটা পুলিশের গাড়িতে হামলা হওয়ায় সময়মতো আসেনি।

অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। দয়া করে সবাই যার যার অবস্থান হতে সহযোগিতা করুন, বিশেষ করে হাঙ্গামা যেন নিভৃত করা যায়। এমনকি আপনাদেরও বিভিন্ন সরকারি পক্ষের সাথে যোগাযোগ থাকলে প্লিজ সহযোগিতা করুন বলেও জানান তিনি।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে রাত ৩টা ২০ মিনিটে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

ট্যাগস :

মধ্যরাতে চবিতে শিক্ষার্থী-স্থানীয়রা সংঘর্ষ, আহত-৫০, পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

মধ্যরাতে চবিতে শিক্ষার্থী-স্থানীয়রা সংঘর্ষ, আহত-৫০, পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষ মাইকে ঘোষণা দিয়ে এ সংঘর্ষে জড়িয়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে ৩২ শিক্ষার্থীসহ ৫০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। শনিবার (৩০ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

দেরিতে ভবনে প্রবেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভবনের দারোয়ানের সাথে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে দারোয়ান তাকে মারধর করেন। ঘটনার শিকার ছাত্রী অপর শিক্ষার্থীকে ফোনে জানালে ২ নম্বর গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে ধরতে গেলে তিনি পালিয়ে যান। শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয়রা ইট পাটকেল মারতে শুরু করে।

এসময় আইন বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ আহত হন। এরপর উভয়ের মাঝে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ৩২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতদের মধ্যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতা আল মাসনূনও রয়েছে।

এরমধ্যে চিকিৎসার জন্য ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। এদিকে আহতদেরকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়।

দর্শন বিভাগের ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সময় মতো বাসায় আসি। আজকেও ১২টার মধ্যে চলে আসি। দারোয়ানকে দরজা খুলতে বললে তিনি খুলছিলেন না। পরে জোরে ডাক দিলে তিনি অকথ্য ভাষায় কথা বলেন। আমি জবাব দিতে গেলে হঠাৎ আমাকে চড় মারেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার রুমমেটরা নামলে তিনি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং লাথি মারতে থাকেন। এরপর আমার রুমমেট ও আশপাশের স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ নিজের ফেসবুক একাউন্ট থেকে পোস্ট দিয়ে বলেন, সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে, যেভাবে পারেন আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করেন। দুই নাম্বারে আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকাবাসীর সংঘর্ষে প্রচুর শিক্ষার্থী আহত।

তিনি আরও লিখেন, সহকারি প্রক্টর কুরবান আলী স্যার, নাজমুল স্যার ও নিরাপত্তা প্রধান রহিম ভাই আহত হন। নিরাপত্তা বাহিনীর অধিকাংশ সদস্য আহত। প্রক্টোরিয়াল বডির গাড়ি, পুলিশের টহলগাড়ি এবং বিশ্ববিদ্যালয় গাড়ি ভেঙে ফেলেছে। আমরা অতিরিক্ত পুলিশ চেয়েছি, যেটা পুলিশের গাড়িতে হামলা হওয়ায় সময়মতো আসেনি।

অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। দয়া করে সবাই যার যার অবস্থান হতে সহযোগিতা করুন, বিশেষ করে হাঙ্গামা যেন নিভৃত করা যায়। এমনকি আপনাদেরও বিভিন্ন সরকারি পক্ষের সাথে যোগাযোগ থাকলে প্লিজ সহযোগিতা করুন বলেও জানান তিনি।

পরবর্তীতে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে রাত ৩টা ২০ মিনিটে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।