যশোরে কপোতাক্ষ নদের উপর নির্মিত নতুন সেতু নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ
বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদের উপর নবনির্মিত সেতুর উচ্চতা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিতে নদের পানি বেড়ে গিয়ে এ সেতুর তলদেশ ছুঁয়ে যাচ্ছে। তাতে নদীতে কোনো নৌযান চলাচল করতে না পারার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে যাওয়ার পথে যশোরের ঝিকরগাছায় উপজেলার বাজারের বুক চিরে কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু পার হতে হয়। শুধু তাই নয় ঢাকা-কোলকাতা মহাসড়কের এসিয়ান হাইওয়ে সড়কে সংযুক্ত হতে হলে এই সেতু অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগের ৬০ বছরের পুরনো সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেটি ভেঙে নতুন দুটি সেতু নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে জাইকার অর্থায়নের একটি সেতুর নির্মাণ সমপন্ন হয়েছে এবং অন্যটির কাজ শিগগিরই শুরু হবে। আর এরই মধ্যে সেতুর উচ্চতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলার মুদ্রন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, নতুন সেতু অনেক নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর কারণে কপোতাক্ষ নদ আরও মরে গেল। ঝিকরগাছা মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দীন বলেন, পুরাতন সেতুর নিচ দিয়ে নৌকা জাহাজ চলাচল করতে পারলেও নতুন সেতুর নিচ দিয়ে একটি ডুঙ্গাও যেতে পারবে না। নদকে মেরে ফেলতে নতুন সেতুই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেন তিনি। ঝিকরগাছা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমরান রশীদ এবং কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদের দাবি, সেতুর নকশা ঠিক হয়নি। তবে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেতু প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান জানান, ১২০ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার চওড়া এই সেতু পুরাতন সেতুর চেয়ে দেড় মিটার উঁচু করা হয়েছে।
অন্যদিকে, উপজেলা প্রকৌশলী শ্যামল কুমার বসু বলছেন, বন্যা বা প্রবল বর্ষায় সেতুর নিচ দিয়ে কোনো কিছু চলাচল করতে পারবে না। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে। আমরা খতিয়ে দেখছি ভুল নকশায় সেতুটির করা হয়েছে কিনা। শিগগিরই কপোতাক্ষ খনন কাজ শুরু করা হবে। ভুলভাবে সেতুটি নির্মান করা হলে সবার ক্ষতির শঙ্কা করছেন তিনি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেতু প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান জানান, বিশেজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সেতু দুটির নকশা করা হয়েছে। পুরাতন সেতুর মাপে এটি করা হচ্ছে। তিনি স্বীকার করেন, পানি সেতুর গার্ডারে লেগে গেলে নদী খনন করতে হবে। তা না হলে নিচ দিয়ে নৌযান চলতে পারবে না।