যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে গেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। হেরেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট বহুল আলোচিত রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে হার মানতে এখনো নারাজ ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হবে ভয়ংকর হবে আগামী ১১ সপ্তাহ । তিনি কী করবেন আগামী সময়ে তা নিয়ে রয়েছে আতঙ্ক। বিশ্লেষকরা মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভয়ংকর হবে আগামী ১১ সপ্তাহ।
জানুয়ারির ২০ তারিখ নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। তার আগ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের শাসনামলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসা, করোনা নিয়ে হেলাফেলা করাসহ নানা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা অমানবিক বলে বিশ্লেষকরা বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করেছেন।
আমেরিকার ইতিহাসে সব থেকে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট বাইডেন
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক লেখক ও বিশ্লেষক ম্যালকম নেনসি বলেন, ট্রাম্প হেরে গেলে শেষ ৯০ দিনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সেভাবে তছনছ করতে থাকবেন যেভাবে এক বিদ্বেষপূর্ণ শিশু কোনো চীনা দোকানে গিয়ে হাতুড়ি দিয়ে নির্বিচারে জিনিস ভাঙতে থাকে।
তবে তিনি এ মন্তব্য করার সময় পর্যন্ত বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আমরা রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিদ্বেষের প্রকাশ দেখতে পাব। তিনি (ট্রাম্প) মনে হয় ঠিক করে রেখেছেন তিনি সশব্দে ক্ষমতা ছাড়তে চান, তিনি বোধ হয় সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছেন যে নির্বাচনের ফলাফল মানবেন না। কে জানে আসলে একজন আপাদমস্তক স্বৈরাচার কী করবেন?’
নেনসে বলেন, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে তিনি নিজের দোষ কখনো দেখতে পাবন। তিনি এখন আশা করছেন সুপ্রিম কোর্ট তার হয়ে কাজ করবে। তার জীবনের সবকিছু নিজের পক্ষে চান তিনি, এখন তার বিশ্বাস যে মার্কিন বিচার ব্যবস্থাকেও কবজা করতে পেরেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প হেরে যাওয়ার পর রাজনীতির চেয়ে নিজের স্বার্থ নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকবেন। নেনসে আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্পের সমর্থকরা অশান্তি তৈরি করতে পারে। সশস্ত্র সন্ত্রাসী, সাদা বর্ণবাদীসহ অন্যরা মাঠে নেমে যেতে পারে।
তিনি বলেন, তারা হয়তো ১০০ ট্রাক নিয়ে যাত্রা করবে যেন তারা মসুলে হামলা করতে যাচ্ছে। জরুরি অবস্থার মতো কোনো ব্যাপার হবে। তারা হয়তো গণজমায়েত করে বলবে আমরা এই ফলাফল বিশ্বাস করি না, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের নেতা, এরপর হয়তো তারা নির্বাচনী কেন্দ্রগুলোর দিকে এগোবে।
গার্ডিয়ান জানায়, নতুন শঙ্কার বিষয় হচ্ছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগ। ম্যানহাটন ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস ইতিমধ্যে ট্রাম্প এবং তার ব্যবসার পক্ষ থেকে ব্যাংকের সঙ্গে করা অনিয়ম, ইন্স্যুরেন্সের বিষয়ে খোঁজ শুরু করেছে। যদিও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকায় তাদের কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না।
ট্রাম্প শিগগিরই অ্যাটর্নি জেনারেলের নিরাপত্তাও হারাবেন। যার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। তার মানে দাঁড়াচ্ছে ট্রাম্প যদি কোনো অনিয়ম করে থাকেন তা থেকে তাকে বের করে আনার সুযোগ কমে আসছে।
সাবেক বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন এবং বর্তমান মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান গ্যারি কাসপারভ বলেন, ট্রাম্প তার শেষ কয়েক মাস পার করবেন নিজেকে রক্ষার জন্য, এবং রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে থাকবেন।
সিএনএনকে তিনি আরো বলেন, আমেরিকানরা যারা আইনের শাসন ও ঐক্য দেখতে চায় তাদের উচিত এর জন্য লড়াই করা, আদালতে এবং যদি প্রয়োজন হয় রাস্তায়, তবে শান্তিপূর্ণভাবে, কারণ সংশয় আছে যে ট্রাম্প সমর্থকরা খুব সহজে ক্ষমতা ছাড়বে না।