রংপুরের মিঠাপুকুরে নারীর সহায়তায় নারী ধর্ষণ
রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ রংপুরের মিঠাপুকুরে এক নারীর সহায়তায় আরেক নারী শ্রমিক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় ওই নারী শ্রমিক শুক্রবার (০২ জুলাই) রাতে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহযোগি নারীসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
শনিবার (০৩ জুলাই) তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জায়গীরহাট এলাকায় এক অটোরাইস মিলে (চাউল ভাঙার মেশিন) শ্রমিকদের জন্য খাবার রান্নার কাজ করেন ওই নারী (৩৮)। স্বামীর সাথে ঝগড়ার কারণে প্রায় ১০ বছর আলাদা থাকেন তিনি। সেই থেকে স্বামী কোন খোঁজ খবর নেয়না। শ্রমিকের কাজ করে ২ সন্তানকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
জায়গীরহাট বিএস কোয়ার্টার এলাকায় ভাড়া থাকতেন ওই নারী। অটোরাইস মিলে শ্রমিকের কাজ করেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার আজিজুলের ছেলে রিয়াজ মিয়া (১৯)। সেই সুবাদে তার সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে ওই নারীর। সেখানে আদুরী নামে অন্য এক নারীর সাথে পরিচয় হয়। আদুরী রিয়াজের সাথে মাঝে মধ্যে কথা বলার জন্য ওই নারীকে নির্জনে ডেকে নিতো। বুধবার (৩০ জুন) রাতে আদুরী ওই নারীকে একটি কলাক্ষেতে ডেকে নেয়।
সেখানে ওৎ পেতে ছিল রিয়াজ। কথা বলার এক পর্যায়ে সে নারী শ্রমিককে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এর আগে আদুরী তার পূর্ব পরিচিত শহিদুলকে বিষয়টি জানিয়ে রাখে। তারা কলাক্ষেত থেকে বের হওয়ার পর শহিদুল ওই নারীকে ধরে ফেলে। বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এবং আবারও শহিদুল ও তার ৫/৭ জন সহযোগি ওই নারীকে কলাক্ষেতে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ কথা কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় ৩ দিন পর ওই নারী মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মিঠাপুকুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাকির হোসেন বলেন, ‘স্বামীর সাথে ১০ বছর ধরে বনিবনা হয় না ওই নারী শ্রমিকের। এরপর থেকে তিনি ২ সন্তানকে নিয়ে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন এবং অটোরাইসমিলে শ্রমিকদের জন্য খাবার রান্না করেন। কুুড়িগ্রামের এক ছেলের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
ভাড়া বাসার পাশে পরিচিত আদুরী বেগম নিয়মিত ওই নারীর সাথে ছেলেকে দেখা স্বাক্ষাত করার ব্যবস্থা করে দেয়। রাতের বেলায় কলাক্ষেতে তাদেরকে ডেকে নেয় এবং অন্য আরও ৫/৭ জনকে পুরুষকে খবর দেয়। সেখানে মূলত এই ঘটনাটি ঘটে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষিত নারীকে ডাক্তারী পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তার অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। সহযোগী নারী আদুরী ও শহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুইজন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে।