জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এরকম গুরুতর প্রতিক্রিয়া বা serious adverse events (SAEs) খুবই স্বাভাবিক, বিশেষত অনেক সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে টিকার পরীক্ষা করলে। প্রতিষ্ঠানটির নীতিমালা অনুযায়ী এবার দেখা হবে ওই বিশেষ টিকা থেকেই অংশগ্রহণকারী অসুস্থ হয়েছেন কিনা সেই অনুযায়ী ঠিক করা হবে ট্রায়াল চলবে কি না।
ভ্যাকসিন তৈরির দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন। কিন্তু সম্প্রতি ভ্যাকসিন পরীক্ষায় বড় ধাক্কা খেল প্রতিষ্ঠানটি। মাঝপথেই করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ট্রায়াল স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন। এক স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। তবে তার দেহে কি ধরনের অসুস্থতা দেখা দিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত নয়।
তবে আপাতত সাময়িক ভাবে সমস্ত ক্লিনিকাল ট্রায়াল স্থগিত রাখা হয়েছে। এদিকে একজন স্বেচ্ছাসেবক অসুস্থ হয়ে পড়ায় ‘Ensemble’ নামের টিকার ট্রায়ালটিও তৃতীয় ধাপে এসে স্থগিত। তার কারণ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
গত মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করে সংস্থাটি। সে সময় জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে জনসনের এই ভ্যাকসিন শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।
ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের একটি অন্তবর্তীকালীন ফলাফলও সে সময় প্রকাশ করা হয়। ওই ফলাফল অনুযায়ী, করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় দুই ধাপেই আশানুরূপ ফলাফল এসেছে। দু’টি ধাপেই দেখা গেছে যে, এই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে কার্যকর।
কিন্তু সম্প্রতি এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এক স্বেচ্ছাসেবী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় সাময়িক সময়ের জন্য সব ধরনের ট্রায়াল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।
শুধু তাই নয়, নতুন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের জন্য যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান নতুন করে খতিয়ে দেখতে একটি নিরপেক্ষ সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই স্বচ্ছাসেবীর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশ হতেই ট্রায়াল প্রক্রিয়া স্থগিত করতে গবেষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
৩ লক্ষ্য টাকায় মায়ার হত্যা হয়ে গেল আত্মহত্যা
সংস্থাটি বলছে, ওই স্বেচ্ছাসেবীর পরিচয় সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া ওই স্বেচ্ছাসেবীর অসুস্থতা সম্পর্কিত তথ্য যাচাই না করেই কিছু বলা যাচ্ছে না।
গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারও মধ্যে দুর্বলতা, অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এক স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা আমাদের তৃতীয় দফার ট্রায়ালসহ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সব ধরনের ট্রায়াল সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের দুই শতাধিক স্থান ছাড়াও আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, পেরু এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশাল পরিসরে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছিল জনসন অ্যান্ড জনসন।
এর আগে এক স্বেচ্ছাসেবীর দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। পরে অবশ্য স্বস্তির খবর দেয় অক্সফোর্ড। পরবর্তীতে আবারও শুরু হয় ট্রায়াল প্রক্রিয়া।