হাসপাতালে ঢুকে আহত প্রতিপক্ষকে ফের মারধর
আব্দুর রহমান ঈশান/নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে প্রতিবেশীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের আটজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নেওয়ার সময় হাসপাতালে ঢুকে তাঁকে ফের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মোহনগঞ্জ থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার কেওয়ারদীঘি গ্রামের মারধরের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে কেওয়ারদীঘি গ্রামের প্রতিবেশী রুবেল মিয়া ও রতন মিয়ার মধ্যে বাচ্চাদের বকাঝকা করা নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরিবারের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে একপক্ষের রুবেল মিয়াসহ চারজন আহত হয়। অপরপক্ষের রতন মিয়াসহ তিন-চারজন আহত হয়।
বিকেলে আহত রুবেল মিয়াকে মোহনগঞ্জ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানেও হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় রুবেলকে দেখতে হাসপাতালে যায় তাঁর চাচাতো ভাই রিপন। রিপনেকেও লোহার রড দিয়ে পেটায় রতনের লোকজন। পরে চিকিৎসকেরা থানায় খবর দিলে পুলিশ হাসপাতালে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
হামলার শিকার রুবেল মিয়া বলেন, ‘বেলা ১১টার দিকে ছোটদের বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে রতনের পরিবারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমিসহ পরিবারের চারজন আহত হই। পরে বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে জরুরি বিভাগে গেলে সেখানে রতনের ভাতিজা আশরাফের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক রড নিয়ে এসে আমার ওপর হামলা চালায়।’
চিকিৎসকেরা তাঁদের পরে শান্ত করতে না পেরে পুলিশে খবর দেয়। এতে তাঁরা বাইরে গিয়ে গেটের কাছে চাচাতো ভাই রিপনকে পেয়ে তাঁকেও রড দিয়ে বেদম পেটায় বলে তিনি জানান।
আহত রিপন জানান, ‘আমি রোগী দেখতে এসেছিলাম। এর মধ্যে আশরাফ ও তাঁর সঙ্গীরা রড দিয়ে পিটিয়ে আমাকে জখম করেছে। আমার ছয়টি দাঁত নড়ে গেছে। এগুলো ফেলে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় রাতে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রতিপক্ষের রতন মিয়া বলেন, ‘ঝগড়া শুরু করেছে রুবেলের পরিবারের লোকজন। এর জেরে আমাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। হাসপাতালের ভেতরে মারধরের বিষয়টি আমার জানা নেই।’
হাসপাতালের ভেতর হামলার বিষয়ে আশরাফের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পার্থ সরকার বলেন, ‘জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আহত রোগীর ওপর হামলা চালালে আমরা পুলিশে খবর দিই। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য হামলাকারীরা চলে যায়।
ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, মারধরের ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।