DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবৃহস্পতিবার ১০ই জুলাই ২০২৫
ঢাকাবৃহস্পতিবার ১০ই জুলাই ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

অভিনেত্রী আশার মৃত্যুতে শামীমকে হাজার ও ঘিরে রহস্য

DoinikAstha
জানুয়ারি ৭, ২০২১ ৬:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিনোদন ডেস্ক:সড়ক দুর্ঘটনায় টেলিভিশন অভিনেত্রী আশা চৌধুরী মারা গেছেন।  ট্রাকের ধাক্কায় অভিনেত্রী আয়েশা আক্তার আশার মৃত্যু ঘটে। সোমবার গভীর রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর তার লাশ সড়কেই পড়ে ছিল দীর্ঘক্ষণ।

অভিনেত্রী আয়েশা আক্তার আশার মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। সেই মামলার জেরে মোটরসাইকেল চালক শামীম আহমেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

(৬ জানুয়ারি) শামীমকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহান আহমেদ মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অন্যদিকে জামিন চেয়ে আবেদন করেন শামীমের আইনজীবী।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে এ মামলার এজাহার আদালতে পৌঁছলে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ছয়-সাত বছর ধরে আসামি শামীম আহমেদের সঙ্গে আশার পরিচয় ছিল। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে আত্মীক সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। প্রায়ই আশাদের বাসায় যাতায়াত করতেন তিনি। আশার পরিবারও তাকে বিশ্বাস ও স্নেহ করত। মাঝে মাঝে অফিস এবং অভিনয়ের কাজে আসা-যাওয়ায় সহযোগিতা করতেন শামীম।

এদিকে আশার মৃত্যুর ঘটনার সময়ের হিসাব মিলছে না। প্রথমে গাজীপুরের বোর্ড বাজার থেকে ফেরার কথা বলা হলেও পরে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আশা বনানী থেকে রওনা করেছে রাত ১১টার দিকে। ২০ মিনিটের মধ্যে বাসায় ফেরার কথা জানিয়েছিলেন। আশা বাসায় আসছেন ভেবে পরিবারের কেউ আর ফোন দেননি।

রাত প্রায় দুইটার দিকে আশাকে বহন করা মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদ অভিনেত্রীর মাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আন্টি, একটু টেকনিক্যাল মোড়ে আসেন।’ শামীম ফোন কেটে দিয়ে কিছুক্ষণ পরে আবার ফোন দিয়ে বলেন, ‘আন্টি আশা আর নেই, মারা গেছে।’ এই তথ্য জানানোর সময় কথা বলতে বলতেই আশার বাবা আবু কালাম কেঁদে ফেলেন। তিনি ফোনটি ধরিয়ে দেন তার শ্যালক মো. দুলাল হোসেনকে।

নিহত আশার মামা দুলাল গণমাধ্যমকে জানান, মোটরবাইকের চালক শামীম আহমেদ পুলিশের সামনে তিন রকম কথা বলেছেন। তাদের ফেরার কথা ছিল কালশী রোড হয়ে কিন্তু টেকনিক্যাল মোড়ে তিনি কীভাবে গেলেন?

এই প্রশ্ন আশার পরিবারের পক্ষ থেকে করা হলে, উত্তরে শামীর জানিয়েছেন তিনি পথ ভুলে গিয়েছিলেন। দুলাল জানান, তার ভাগনি আশার ঢাকার প্রায় সব রাস্তাই চেনা। তাহলে কীভাবে পথ ভুল হলো? তা ছাড়া এই বাইকচালক পুলিশের সামনে বলেছেন, রোড পার হতে গিয়ে আশা দুর্ঘটনায় মারা গেছে। কিন্তু সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, মোটরবাইকে থাকা অবস্থায় ট্রাকের ধাক্কায় আশা রাস্তায় পড়ে যান। তার মাথার ওপর দিয়ে ট্রাকের চাকা চলে যায়।

দুলাল বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ শামীমই নেশাজাতীয় কিছু খাইয়েছিল আশাকে। কারণ, আশা সুস্থ থাকলে শামীমকে ধরে বসত। আশার রাস্তায় ছিটকে যাওয়ার পর সে আশাকে একবারও ধরে নাই। শামীম আড়াই ঘণ্টা কীভাবে রাস্তায় ঘুরেছে, তার সঠিক উত্তর দিতে পারে নাই। সন্দেহ হওয়ায় তাকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত ট্রাকচালকের নামে মামলাটি করেছি।’

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, শামীম বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে দুই ট্রাকের মাঝখান দিয়ে দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় সামনের ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে আশা মোটরসাইকেলের পেছন থেকে ছিটকে পড়ে যান। এরপর পেছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি অজ্ঞাত ট্রাক তাকে চাপা দিলে মাথায় জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই আশা মারা যান।

এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার আয়শা আক্তার আশার বাবা মো. আবু কালাম বাদী হয়ে দারুস সালাম থানায় একটি মামলা করেন। ওইদিনই শামীমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

উল্লেখ্য, আয়শা আক্তার আশা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) আইন বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারে পড়ছিলেন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।