লাল গ্রহ মঙ্গলের মাটিতে পা রেখেই একের পর এক চমক দেখাচ্ছে নাসার রোভার পারসিভারেন্স। এবার ৩৩ মিনিট ধরে মঙ্গলে ঘোরাফেরা করে রোবটযানটি।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, বৃহস্পতিবার লাল গ্রহের ২১.৩ ফুট এলাকা জুড়ে ঘোরাফেরা করে পারসিভারেন্স। এ ঘটনা মঙ্গলগ্রহ অভিযানে একে অনন্য মাইলফলক।
পারসিভারেন্স মোবিলিটি টেস্ট বেড ইঞ্জিনিয়ার অ্যানেইস জারিফিয়ান এ ঘটনায় বেশ উচ্ছ্বসিত। তিনি লেখেন, আমাদের টেস্ট ড্রাইভ দারুণ হয়েছে। দেখতেই পাচ্ছেন, মঙ্গলের মাটিতে আমরা চাকার দাগ রেখে এসেছি। চাকার দাগ অনেকবারই দেখেছি। তবে মনে হয় না কখনোই এতটা খুশি হয়েছি।
ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি থেকে বলেন, এই তো সবে শুরু। আমরা আরও দীর্ঘ টেস্ট ড্রাইভ করবো।
নাসা জানিয়েছে, প্রথমে ১৩.১২ ফুট এগিয়ে গিয়ে ১৫০ ডিগ্রি বাঁ-দিকে মুখ ঘোরায় পারসিভের্যান্স। এর পর পিছিয়ে আসে ৮.২ ফুট। শুক্রবার ও শনিবারেও লাল গ্রহের মাটি চষে বেড়ানোর কথা রোভারটির।
মঙ্গলের একদিনের সময় অনুয়ায়ী রোবটযানটি প্রতিদিন ২০০ মিটার ঘোরাফেরা করতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে দক্ষতায় পারসিভারেন্স এগিয়ে রয়েছে আগে পাঠানো নাসার রোভার কিউরিওসিটির চেয়ে। কিউরিওসিটির তুলনায় ৫ গুণ দ্রুত গতিতে এগোতে পারে নতুনটি। মঙ্গলে পা রাখার পর ৮ বছর পর, এখনো কাজ করে চলেছে কিউরিওসিটি।
মঙ্গলের অন্যতম মারাত্মক দুর্গম অঞ্চলে জেজেরো ক্র্যাটারে রয়েছে পারসিভারেন্স। এখানে রয়েছে গভীর উপত্যকা, সুউচ্চ পাহাড়, বালির টিলা এবং প্রচুর উঁচু-নিচু পাথর, যা জায়গাটিকে অসমান করে তুলেছে। তাই এই এলাকায় আদৈ রোভার নামতে কতটা সক্ষম হয়, সেদিকে নজর ছিল সবার। মনে করা হয় একসময় এখানে নদী প্রবাহিত হতো। পরে সেটি হয়তো হ্রদে পরিণত হয়।
‘মার্স ২০২০’ প্রকল্পের অন্যতম বিজ্ঞানী কেন উইলিফোর্ড বলেন, জীবনের চিহ্ন খোঁজার জন্য সবচেয়ে আদর্শ জায়গা হচ্ছে জেজেরো হ্রদ। আমি এমনটাই মনে করি। এর উপকূল কার্বন এবং নানা খনিজ পদার্থের সন্ধান মিলেছে। তাই এখানে জীবাশ্ম থাকার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে নাসা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মঙ্গলের বুকে আরও চারটি রোভার পাঠায়। যার প্রত্যেকটাই সফলভাবে মঙ্গলের বুকে অবতরণ করতে সক্ষম হয়।