চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও সাবেক আরএমও বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
জেলা প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান ও সদর হাসপাতালের সাবেক আরএমও ডা. শামীম কবিরের বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি চুয়াডাঙ্গায় সরেজমিনে তদন্ত করেছেন।
গতকাল রোববার সকাল ১০টায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে ওই তদন্ত কমিটি চুয়াডাঙ্গায় আসে। কমিটির অন্য দুজন সদস্য ছিলেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও ডা. সুভাষ রঞ্জন হালদার ও অফিস সহকারী মো. আলিমুজ্জামান।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মৃত হযরত আলীর পুত্র আকবর আলী নামের এক ব্যক্তি কুষ্টিয়ায় দুদকের কার্যালয়ে দুদকের উপ-পরিচালক বরাবরে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান ও সদর হাসপাতালের সাবেক আরএমও ডা. শামীম কবিরের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন কার্যালয়, চুয়াডাঙ্গায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাস মহামারীতে ওষুধ, এমএসআর দ্রব্যাদি না কিনে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেন।
ওই অভিযোগটি দুদক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠালে অভিযোগের সত্যতা নিরুপণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ৩ জুন চিঠির মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মারুফ হাসান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ভান্ডার রক্ষক, সাবেক আরএমও ডা. শামীম কবির, সদর হাসপাতালের হিসাবরক্ষক, সদর হাসপাতালের ভান্ডার রক্ষক, চার উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, তাঁদের দপ্তরের ভান্ডার রক্ষক, টিবি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও ভান্ডার রক্ষককে ৬ জুন গতকাল রোববার তদন্তকার্যে সহযোগিতার জন্য সশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য জানায়। তাঁদেরকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ওষুধ সামগ্রী ও এমএসআর সামগ্রী প্রাপ্তি সংক্রান্ত সকল নথি ও মজুদ বহি সঙ্গে আনার জন্য পত্র দেয়। রোববার সকাল ১০টায় ওই তদন্ত কমিটি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সম্মেলনকক্ষে তাঁদের কথা শোনেন এবং নথিপত্র, তথ্য-উপাত্ত ও ডকুমেন্ট ফটোকপি করে নেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ মুঠোফোনে বলেন, ‘দুদকে জনৈক আকবর আলী একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। দুদক সেটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অভিযোগের সত্যতা নিরুপণের জন্য আমাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। আমি চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি।
সমস্ত ডকুমেন্ট ও তথ্য-উপাত্ত, ফটোকপি করে নিয়ে এসেছি। সেগুলো যাচাই-বাচাই ও পর্যালোচনা করতে হবে। তবে অভিযাগকারীর ঠিকানা অসম্পূর্ণ। তিনি শুধুমাত্র সদর উপজেলা লিখেছেন। তাঁর মোবাইল নম্বরও নেই। আমি তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।
আসলে একপক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত দেওয়া যায় না। আমার ইচ্ছা ছিলো তাঁর সাথেও কথা বলার। কিন্তু তিনি অসম্পূর্ণ ঠিকানা দিয়েছেন।’তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. বিধান চন্দ্র ঘোষ এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান ও সদর হাসপাতালের সাবেক আরএমও ডা. শামীম কবিরের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন কার্যালয়, চুয়াডাঙ্গায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাস মহামারীতে ওষুধ, এমএসআর দ্রব্যদি না কিনে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগটি যিনি দিয়েছেন, আসলে তাঁর সাথে কথা না বলতে পারাটা আমার আফসোস থেকে গেল।
আমার সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে যদি মনে হয় আমার আবার চুয়াডাঙ্গায় যাওয়ার প্রয়োজন আছে, তাহলে আমি যাব। আমি নিরপেক্ষ এবং সততার সাথে তদন্ত প্রতিবেদন দেব।