ভোট করাতে হবে ৮২ হাজারের বেশি আধাসেনা দিয়ে-হাইকোর্ট
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
কলকাতা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রতি জেলায় এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের স্বার্থে এত কম আধাসেনা অপর্যাপ্ত।
২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে যত আধাসেনা আনা হয়েছিল, এবার তার থেকেও বেশি বাহিনী আনতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে দায়ের হওয়া আদালত অবমাননার মামলায় বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারকরা বলে দিয়েছেন, ২০১৩ সালের ভোটে ৮২ হাজার আধাসেনা মোতায়েনের কথা বলেছিল কমিশন। এবার কোনওভাবেই তার চেয়ে কম বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাহিনী চেয়ে কেন্দ্রকে বার্তা দিতে হবে।
গত ১৫ জুন হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্যের সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে। সেই সঙ্গে কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই নির্দেশ পালন করতে বলা হয়। কিন্তু তা না করে বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার ও কমিশন। শীর্ষ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে।
এদিকে, হাইকোর্টের আগের নির্দেশ না মানায় আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাতেই এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু তাই নয়, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে কমিশনারকে কার্যত পদ ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
শুনানিতে কমিশনের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা নিরপেক্ষ সংস্থা। নির্বাচনে কত বাহিনী প্রয়োজন, আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন। কেন আদালতকে বলে দিতে হবে? মানুষ যদি বিশ্বাস হারায়, তাহলে নির্বাচন করে লাভ কী? আপনারা যে পরিমাণ বাহিনীর কথা বলেছেন, তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। আপনার কমিশনার যদি দায়িত্ব না নিতে পারেন, তাহলে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। রাজ্যপাল অন্য কাউকে দায়িত্ব দেবেন। বলতে বাধ্য হচ্ছি, কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
বিজেপির আইনজীবী সৌম্য মজুমদার ও শ্রীজীব চক্রবর্তী সওয়ালে বলেন, ‘২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ৮২ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল রাজ্যে। এবার বাইরের রাজ্যের পুলিস আনার কথা বলা হচ্ছে। তাও ভোটের আগের দিন। এটা নির্দেশের চূড়ান্ত অবমাননা।
পাল্টা নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মানা হয়েছে। রাজ্যের প্রতি জেলার জন্য এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। সওয়াল-জবাব শুনে আদালত এই নির্দেশ দেয়।
কমিশন সূত্রে খবর, এদিন আদালতের নির্দেশ হাতে পেতে রাত হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে কোনও আলোচনা হয়নি। নির্দেশ মেনে রাজ্য বাহিনী চাইবে, নাকি ফের তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে, তা জানা যাবে আজ, বৃহস্পতিবারই। আগামী শুক্রবার ফের শুনানি। (সূূূূূত্র-কলতার সংবাদপত্র বর্তমান)।