জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। এ হাসপাতালের একটি কক্ষে ধবধবে সাদা চাদর বিছানো রোগীদের শয্যা বা বেড। চিকিৎসার জন্য প্রতিটি বেডের সঙ্গে লাগানো রয়েছে যন্ত্রপাতি। বেড বাদে আরও যন্ত্র রয়েছে ওই কক্ষ জুড়ে। প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের এ সব যন্ত্রপাতি বসিয়ে আইসিইউ ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হলেও শুধু চিকিৎসক অভাবে জয়পুরহাট জেলাবাসী কোনো সেবা পাচ্ছে না আইসিইউর।
করোনাকালীন সময়ে জয়পুরহাট ২৫০ বেডের হাসপাতালে ১০ বেডের আইসিইউ (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জয়পুরহাট গণপূর্ত বিভাগ, জেলা পরিষদ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও জয়পুরহাটের সচ্ছল ব্যক্তিবর্গের অর্থায়নে তৈরি হয় আইসিইউ ওয়ার্ড। শুধু মাত্র সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও জনবল অভাবে দীর্ঘ ৩ বছরেও ওয়ার্ডটি চালু করতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জয়পুরহাট হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে ৫০ বেডের জেলা হাসপাতালটিকে ১০০ বেডে উন্নত করা হয়। ২০০৬ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা ১৫০ বেডের জেলা আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে উদ্বোধন করেন। ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর এ হাসপাতালটিকে ২৫০ বেডের হাসপাতাল হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। ধাপে ধাপে বেড সংখ্যা বাড়লেও প্রয়োজন সংখ্যক চিকিৎসকসহ জনবল নিয়োগ নেই। ২৫০ বেডের অনুমোদন পাওয়া হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০০ বেডের চিকিৎসক ও জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতাল। চিকিৎসকের পদ ৪৬ জন। কর্মরত রয়েছেন ৩৩ জন। চিকিৎসকের শূন্য পদ ১৩টি।
প্রশিক্ষণ নেওয়া আইসিইউ ওয়ার্ডের দায়িত্বে আছেন হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স আব্দুল্লাহ রানা। তিনি জানান, রোগী ছাড়াই এ সব যন্ত্রপাতি সচল রাখতে প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা করে চালু রাখতে হয়। না হলে মূল্যবান ব্যাটারির কার্যকারিতা ও যন্ত্র নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ জন্য ৪ ঘণ্টা করে চালু রাখতে হয়।
২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জানান, করোনাকালীন সময়ে হাসপাতালে আইসিইউ ওয়ার্ডের প্রয়োজনীয়তা থেকে ১০ শয্যার একটি আইসিইউ ওয়ার্ড তৈরি করা হয়। চিকিৎসা করতে যে সব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তা প্রায় দেড় কোটি টাকায় কেনা হয়। কিন্তু চিকিৎসক এখনো নিয়োগ পাওয়া যায়নি। আইসিইউ ওয়ার্ডে সেবা দেওয়ার জন্য ১৬ জন সিনিয়র নার্সকে ইতঃপূর্বে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ওয়ার্ড ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে সেবা দিতে গেলে ৭ জন অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিওলজিষ্ট) চিকিৎসকসহ আরও জনবল প্রয়োজন। সেখানে মাত্র ২ জন অবেদনবিদ কর্মরত। তিনি আশাবাদী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ দিবেন।
জয়পুরহাট শহরের বিশ্বাসপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা কে.এম শাহিন ইকবাল বলেন, আইসিইউ ইউনিট চালু হলে জেলাবাসী খুব উপকৃত হতো।