রাতারাতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিলেন রানাঘাট স্টেশনের রানু মণ্ডল। একটি গান ভাইরাল হতেই লতাকন্ঠীর তকমা পেয়েছিলেন সেই বৃদ্ধা। মুহূর্তেই যেন বদলে গিয়েছিল তার জীবন। রানাঘাট স্টেশন থেকে বলিউডের খ্যাতির মুখ পর্যন্ত দেখে নিয়েছিলেন তিনি।
গত বছর পুজায় পাড়ায় পাড়ায় মণ্ডপে বেঁধেছিল রানু মণ্ডলের গান। বলিউড সঙ্গীত পরিচালক হিমেশ রেশমিয়া তাকে দিয়ে নিজের ছবিতে গান গাইয়েছিলেন। সংবাদমাধ্যমের পাতায় উঠে আসছিল রানু মণ্ডলের নাম। কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘুরে যেতে সময় লাগে না। রাতারাতি খ্যাতির মুখ দেখে নিলেও, তা হারিয়ে ফেলতেও বেশি সময় লাগেনি রানু মন্ডলের।
২০১৯ এর নভেম্বরে হিমেশ রেশমিয়ার সুরে গান গেয়েছিলেন রানু মণ্ডল। সেই গানটিও ভাইরাল হয়েছিল মুহূর্তে। কিন্তু তারপর থেকে বলিউডে আর কোনো ছবিতে তাকে গান গাইতে শোনা যায়নি। বরং খ্যাতি পাওয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন রানাঘাটের লতাকন্ঠী।
জানা যায়, একসময় নিজের পুরনো বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতে গিয়েছিলেন রানু। কিন্তু করোনা প্যানডেমিক এর মধ্যে সেই নতুন বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ফের পুরনো আস্তানায় ফিরতে হয় রানুকে। ফের অভাবের দিন শুরু হয় রানাঘাটের রানু মণ্ডলের। জানা যায় বলিউডে আর কোনো কাজ পাননি তিনি। মহামারীর কারণে হাতে অন্য কোনো কাজও নেই তার। আর তাই আর্থিক অভাব আবার ঘিরে ধরেছে তাকে।
তবে শুধু মহামারীর জন্য নয়। খ্যাতির চূড়ায় থেকে ফের পড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে তার সেলেব্রিটি সুলভ আচরণকে দায়ী করেন অনেকে। হিমেশ রেশামিয়ার সুরে গান রিলিজ হওয়ার পরে, একটি ইভেন্টে রানু মণ্ডলের সঙ্গে তার এক ভক্ত সেলফি তুলতে চান। সেই ভক্ত রানু মণ্ডলকে স্পর্শ করে ফেকেছিলেন।
আর তাতেই বেজায় চটে যান রানাঘাটের লতা কণ্ঠী। সঙ্গে সঙ্গে বিরক্ত হয়ে হিন্দিতে উত্তর দেন, এটা কী হচ্ছে! এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। রানু মণ্ডলের এমন উদ্ধত আচরণ মেনে নিতে পারেননি তার ভক্তরা।
এরকমই বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটার পর থেকে তার ভাবমূর্তি বদলে যেতে শুরু করে। খ্যাতির চূড়ায় থেকে নামিয়ে আনতে শুরু করেন তার ভক্তরাই। আর তাই এখন বেশ অভাবে দিন কাটছে রানু মণ্ডলের।
কিন্তু এই লকডাউন এরমধ্যে নিজের প্রতিবেশীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। নিজের এলাকায় যে সমস্ত অভাবী মানুষ রয়েছেন তাদেরকে মহামারীর সময় বিভিন্ন জিনিস দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।
একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল যেখানে দেখা যাচ্ছিল যে রানু তার এলাকার অভাবী মানুষের হাতে চাল, ডালসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন। কিন্তু এখন তিনি নিজেই খুব অভাব এর মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।