কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে লাখ লাখ মুসুল্লীর অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ পবিত্র ঈদ উল ফিতরের ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ৩১ মার্চ, সকাল ১০ টায় শুরু হওয়া এ জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসুল্লী একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছেন বলে জানা গেছে।
১৮২৮ সালে ১ম অনুষ্ঠিত দেশের সর্ববৃহৎ এ ঈদগাহে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়ায়।
জামাত শুরুর আগেই সাত একর আয়তনের শোলাকিয়া মাঠটি পূর্ণ হয়ে যায়। আগত মুসল্লিদের অনেকে মাঠে জায়গা না পেয়ে পার্শ্ববতী রাস্তা, তিনপাশের ফাঁকা জায়গা, নদীর পাড় ও শোলাকিয়া সেতুতে জায়গা করে নিয়ে জামাতের জন্য দাঁড়িয়ে পড়েন।
মাঠের সুনাম ও জনশ্রুতির কারণে ঈদের বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই কিশোরগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও সারাদেশের বিভিন্ন জেলা তথা ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, গাজীপুর, নরসিংদী, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, জামালপুর, খাগড়াছড়ি, শেরপুর, যশোর, খুলনা ও চট্রগ্রামসহ অধিকাংশ জেলা থেকে শোলাকিয়ায় মুসল্লিদের সমাগম ঘটে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত জানান, এবারের ঈদ জামাতে প্রায় ৬ লাখ মুসুল্লী ঈদ অংশগ্রাহণ করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে দেশ ও জাতির উন্নতি, সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর সংহতি ও ঐক্য কামনা করেন।কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, মুসুল্লিদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নামাজের সময় বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব. সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোষাকে নজরদারি করেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এছাড়াও মাঠসহ প্রবেশ পথগুলোতে ছিল সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে।
এবার নামাজের ইমামতি করেন মাওলানা মুফতি আবুল খায়ের সাইফুল্লাহ। রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সঙ্কেত দেওয়া হয়। জামাতের পর খুতবা পাঠ শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়।
এ ঈদ জামাতকে উপলক্ষ করে জেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় তোরণ নির্মাণ, ব্যানার-ফেস্টুন টানানো, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, জরুরী স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতাসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের উপস্থিতি ও কর্মব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।