মসজিদের মিম্বার, মাহফিল কিংবা সেমিনার থেকে আলেম সমাজ নিয়মিত ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। যৌতুকপ্রথা বন্ধ, সঠিকভাবে মিরাস বণ্টন, মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত কথা বলে আসছেন। দেশের যেকোনো দুর্দিন ও দুর্যোগে সবার আগে মাঠে নামেন আলেম সমাজ। একটা সময় ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক বা আধুনিক চিন্তাধারার প্রসঙ্গ উঠলেই অবহেলার পাত্র হতেন কওমি আলেমরা। তবে সেই সময় ফুরিয়েছে। অদম্য কর্মগুণে আলেমরা বার্তা দিচ্ছেন এগিয়ে যাওয়ার। সর্বমহলে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। সমাজ থেকে রাষ্ট্র, একাত্তর থেকে চব্বিশ, মিম্বর থেকে রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম, মুদি দোকানি থেকে সংবাদকক্ষ— সবখানেই সমানতালে কওমি আলেমদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। বিশ্বায়নের এই সময়ে মানুষের চিন্তা-চেতনা বিকাশে মিডিয়ার প্রভাব প্রশ্নাতীত। এই যুগে মিডিয়াকে উপেক্ষা করা অসম্ভব ব্যাপারই বটে। তাই যুগচাহিদা পূরণে সংবাদকক্ষ থেকে যেসব কওমি আলেম দ্যুতি ছড়াচ্ছেন:
মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব
প্রখ্যাত আলেম সাংবাদিক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী ১৯৮৩ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার স্বনামধন্য আল জামিয়া ইমদাদিয়া থেকে কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রি দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স ) সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৮৪ সালে পটিয়া মাদরাসা থেকে আরবি ভাষা ও সাহিত্যে উচ্চতর লেখাপড়া শেষ করেন। ১৯৮৫–৮৬ সালে ভারতের দারুল উলুম নদওয়াতুল উলমায় ইসলামি শিক্ষা ও আরবি ভাষায় স্নাতক সম্পন্ন করেন। ১৯৯৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএ (মাস্টার্স) ডিগ্রিও লাভ করেন। এছাড়া মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অনুষদ থেকে দাওয়াহ ও কালচারাল কোর্সে প্রশিক্ষণসহ মিডিয়া এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিশেষ ডিগ্রিও নিয়েছেন দেশসেরা এই আলেম। বর্তমানে তিনি দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি কওমি মাদরাসা কেন্দ্রিক শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র মহাপরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন।
মাওলানা লিয়াকত আলী, সিনিয়র সহসম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত
খ্যাতনামা আলেম সাংবাদিক মাওলানা লিয়াকত আলী নিজ গ্রাম গুমানতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। এরপর স্কুল ছেড়ে ভর্তি হন গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসায়। এ যাত্রায় বেশ সুনামের সঙ্গে পা বাড়ান। জামিয়া কোরআনিয়া লালবাগ থেকে সমাপ্ত করেন দাওরায়ে হাদিস। পাশাপাশি এসএসসিতে যশোর বোর্ডে মেধাতালিকায় ৬ষ্ঠ স্থান ও এইচএসসিতে ঢাকা বোর্ডে ৭ম স্থান অধিকারের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় বিএ (অনার্স) ও এমএ (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন।
বর্তমানে তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি মাওলানা লিয়াকত আলী দায়িত্ব পালন করছেন মিরপুর মাদরসা দারুর রাশাদের শিক্ষা সচিব ও জামিয়া রহমানিয়া ঢাকার সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে। এছাড়া তিনি নদওয়াতুল উলামা কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক ইসলামি সাহিত্য সংস্থার ঢাকা ব্যুরোর সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবেও কাজ করছেন।
মুফতি এনায়েতুল্লাহ, সহকারী সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি মুফতি এনায়েতুল্লাহ মিরপুরের জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ থেকে ২০০০ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। পরের বছর একই প্রতিষ্ঠান থেকে ইফতাও (উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা) সম্পন্ন করেন। ইসলামি অঙ্গনের প্রথম সারির এই সাংবাদিক কাজ করেছেন দৈনিক সমকাল, বাংলা নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ও দেশ রূপান্তরসহ একাধিক মিডিয়ায়। লিখেছেন সাড়া জাগানো দুটি বইও। বর্তমানে তিনি বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
আলী হাসান তৈয়ব, বিভাগীয় সম্পাদক (ইসলাম), দৈনিক নয়া শতাব্দী
মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব মিরপুরের জামেউল উলুম থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। এরপর আল মারকাযুল ইসলামি থেকে আদব ও মাদরাসা দারুর রাশাদ মিরপুর থেকে সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় বিশেষ কোর্স গ্রহণ করেন। ইসলামের শাশ্বত জীবনদর্শন বাঙালি পাঠকসমাজের কাছে সহজভাবে তুলে ধরার পুণ্যব্রত হাতে নেওয়া এই আলেম বর্তমানে দৈনিক নয়া শতাব্দীর ইসলাম বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি আন-নুর জামে মসজিদের খতিব এবং মাদরাসা আবু রাফে’র মুহতামিম হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
জহির উদ্দিন বাবর, বার্তা সম্পাদক, ঢাকা মেইল
মাওলানা জহির উদ্দিন বাবর ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। পরে মিরপুরের মাদরাসা দারুর রাশাদ থেকে সাহিত্য-সাংবাদিকতায় বিশেষ কোর্স গ্রহণ করেন। পাশাপাশি সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে তিনি দেশের প্রথম সারির অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ঢাকা মেইলের বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। পরিশ্রমী এই আলেম সাংবাদিক অর্ধশতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
হুমায়ুন আইয়ুব, সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম
সাহিত্য সংগঠন শীলন বাংলাদেশের সাবলীল তরুণ মাওলানা হুমায়ুন আইয়ুবের প্রাথমিক পড়াশোনা সকালের মক্তবে। এরপর মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে দাওরা ও ইফতা করেছেন রাজধানীর চৌধুরীপাড়ার শেখ জনুরুদ্দীন (রহ.) দারুল কুরআন মাদরাসা থেকে। ছড়ার মাধ্যমে তার লেখালেখির হাতেখড়ি হলেও ঋদ্ধ হয়েছেনে গদ্যে। লিখেছেন শিশুতোষসহ গবেষণাধর্মী একাধিক গ্রন্থ। বর্তমানে তিনি ইসলামি অনলাইন নিউজ পোর্টাল আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদক।
মিরাজ রহমান, বিভাগীয় প্রধান (ইসলাম), দৈনিক খবরের কাগজ
গতানুগতিক ধারার বাইরে কাজ করা মিরাজ রহমান দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন রাজধানীর লালবাগ মাদরাসা থেকে। পড়েছেন জেনারেল শিক্ষাও। দেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইসলামবিষয়ক অনলাইন পোর্টাল ‘প্রিয় ইসলাম’-এর সৃষ্টি ও পথচলা তারই হাতে। টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন তিনি। তার লেখা বইয়ের সংখ্যা ১২টি। প্রোডাক্টিভ মুসলিম, মুসলিম সভ্যতার ১০০১ আবিষ্কার ও দ্য গ্রেটেস্ট অন্ট্রাপ্রেনর মুহাম্মাদ (সা.)- তার বেস্টসেলার বই। খ্যাতনামা এই আলেম সাংবাদিক বর্তমানে দৈনিক খবরের কাগজের ইসলাম বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।
তোফায়েল গাজালি, সহ-সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তর
মাওলানা তোফায়েল গাজালির পড়ালেখার হাতেখড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নিজ এলাকায়। এরপর মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ২০১০ সালে রাজধানীর ইসলামবাগ মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। ২০১২ সালে দৈনিক স্বাধীন বাংলায় সহসম্পাদক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে পেশাদার সাংবাদিকতায় পা রাখেন তিনি। বর্তমানে তিনি দৈনিক যুগান্তরের সহসম্পাদক (ইসলাম) হিসেবে কাজ করছেন।
মুফতি আবদুল্লাহ তামিম, সিনিয়র সহসম্পাদক, সময় টেলিভিশন
রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায় মিশকাত পর্যন্ত পড়ে হাটহাজারী মাদরাসায় দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন মুফতি আবদুল্লাহ তামিম । এরপর জামিয়া শায়েখ জাকারিয়া কাঁচকুড়া উত্তরা মাদরাসায় ইফতা পড়েন। পাশাপাশি ঢাকা আলিয়া থেকে কামিল ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) করেন। তিনি বর্তমানে সময় টেলিভিশনের ইসলাম বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। একই সাথে ঢাকার মানিকনগরে অবস্থিত জামিয়া শায়খ আরশাদ আল মাদানি ঢাকায় ইফতা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা, সহ সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠ
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা বৃহত্তর নোয়াখালীর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আল জামিয়াতুল ইসলামিয়াতে প্রাথমিক থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ইফতাও সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালের রমজানে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ বসুন্ধরার ফতোয়া সংকলন প্রকল্পে যোগ দেন মর্তুজা। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল যোগ দেন দৈনিক কালের কণ্ঠে। বর্তমানে তিনি এখানেই কর্মরত।
মুফতি আরিফ খান সাদ, সহ-সম্পাদক, দৈনিক সময়ের আলো
মুফতি আরিফ খান সাদ রাজধানীর উত্তরা বাইতুস সালাম মাদরাসায় প্রাথমিক পড়ালেখা শেষ করে ভর্তি হন চট্টগ্রামের দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে। সেখান থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন। এরপর শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামিক স্টাডিজে অনার্সও করেছেন এই আলেম সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি দৈনিক সময়ের আলোর সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
তানজিল আমির, সহ -সম্পাদক, দৈনিক যুগান্তর
মেধাবী আলেম তানজিল আমির ২০১৭ সালে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামেয়া শারইয়্যা মালিবাগ থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। এরপর ইসলামী আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেন বসুন্ধরার মারকাযুত তালিম আল ইসলামিয়া থেকে। পুরোদস্তুর কওমি মাদ্রাসায় পড়ুয়া এ আলেম সাংবাদিকের লেখালেখির প্রতি আগ্রহ ছিল শৈশব থেকেই। বিস্তৃত পরিসরে কাজের সুবাদে অদম্য পায়ে পাড়ি জমিয়েছেন সংবাদ ও সাংবাদিকতার জগতে। বর্তমানে তিনি দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন বিভাগে সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। পুরস্কৃত হয়েছেন যুগান্তরের সেরাকর্মী হিসেবেও। আন্তর্জাতিক ও ধর্মের পাশাপাশি যুগান্তর অনলাইনের সেন্ট্রাল ডেস্কও সামলান এ আলেম সাংবাদিক।
আতাউর রহমান খসরু, সহ-সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠ
মাওলানা আতাউর রহমান খসরু রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে তাকমিল (দাওরা হাদিস) সম্পন্ন করেন। ইফতা পড়েন চৌধুরীপাড়ার শেখ জনুরুদ্দিন (রহ.) দারুল কুরআন মাদরাসায়। এরপর মিরপুরের মাদরাসা দারুর রাশাদে দুই বছর সাহিত্য ও সাংবাদিকতা পড়েন। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে দৈনিক কালের কণ্ঠে সহসম্পাদক পদে কর্মরত তিনি। তরুণ এই আলেমের ৯টি বই ইতোমধ্যে পাঠকের হাতে পৌঁছেছে।
মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ,সহ-সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
আলেম সাংবাদিক মুনশি মুহাম্মদ উবাইদুল্লাহ পবিত্র কুরআন হিফজ করেছেন ফরিদপুরের মাদরাসা আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) থেকে। হাদিসে মাস্টার্স করেছেন ঢাকার জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগে। এরপর বিশ্বখ্যাত বিদ্যাপীঠ ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে পড়েছেন উচ্চতর হাদিস বিষয়ে। ইসলামি আইন ও বিচার বিষয়ে পড়েছেন দেওবন্দেই অবস্থিত জামিয়া ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)-এ। বর্তমানে তিনি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশে সহসম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত আছেন। মেধাবী এই আলেম মলাটবদ্ধ করেছেন পাঠকজয়ী একাধিক গ্রন্থ।
ইজাজুল হক, সহ-সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মাওলানা ইজাজুল হক দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেছেন চট্টগ্রামের জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়া থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স-মাস্টার্স করেন তিনি। কালের কণ্ঠে লেখালেখির মাধ্যমে ইসলামি পাতায় লেখালেখির সূচনা তার। বর্তমানে দৈনিক আজকের পত্রিকার ইসলাম বিভাগের দায়িত্বে আছেন তিনি। তারুণ্যে ভরা এই আলেম অনুবাদ করেছেন পাঠকপ্রিয় দুটি বই।
মুহাম্মদ জাকারিয়া হারুন, সহ-সম্পাদক, সময় টেলিভিশন
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখা শেষে ২০০৫ সালে কাপাসিয়া দারুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হন মাওলানা জাকারিয়া হারুন। এরপর ২০০৮ সালে দেশসেরা প্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায় পাড়ি জমান। সেখান থেকেই ২০১৫ সালে দাওরায়ে হাদিসে (মাস্টার্স) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এরপর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা থেকে ইফতা (উচ্চতর ইসলামি আইন গবেষণা) সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে কামিলে অধ্যয়নরত তিনি। ২০১৩ সালে প্রেসক্লাবে ক্ষুদে গবেষক পদকজয়ী মেধাবী এই আলেম বর্তমানে সময় টিভিতে কর্মরত।
মো. নোমান বিল্লাহ, সহ-সম্পাদক, সময় টেলিভিশন
মাওলানা নোমান বিল্লাহ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে ইচ্ছা হয় হাফেজ-আলেম হওয়ার। সেই চিন্তা থেকে ২০০৮ সালে তাহফিজুল কুরআন এবং ২০১৮ সালে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে সময় টেলিভিশনে সহসম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত আছেন তিনি।
মুহাম্মদ হেদায়াতুল্লাহ, সহ-সম্পাদক, দৈনিক কালের কণ্ঠ
মাওলানা মুহাম্মদ হেদায়াতুল্লাহ চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মা‘আরিফ আল-ইসলামিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। এরপর একই প্রতিষ্ঠানে উচ্চতর আরবি ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি কবি নজরুল সরকারি কলেজ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন এই আলেম। বর্তমানে তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠে সহসম্পাদক হিসেবে যুক্ত আছেন।
আবু সাঈদ, সিনিয়র সাব এডিটর, দৈনিক নয়া দিগন্ত
মেহেরপুরে জন্ম নেওয়া মাওলানা আবু সাঈদ পড়াশোনা করেছেন রাজধানী ঢাকার দারুল উলূম মাদানী নগর মাদরাসায়। এখান থেকেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমকি ও দাওরা (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেছেন তিনি। এরপর ইফতা পড়েছেন জামিয়া শরঈয়্যাহ মালিবাগের দারুল ইফতায়। পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালেখিতেও বেশ টান ছিল এই তরুণের। ছড়া-কবিতা, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে নিজেকে সমৃদ্ধ করে পা বাড়িয়েছেন সাংবাদিকতায়। বর্তমানে তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তের সিনিয়র সাব এডিটর হিসেবে কর্মরত।
হাসান আল মাহমুদ , চীফ রিপোর্টার, আওয়ার ইসলাম
রাজধানীর বাড্ডা মিফতাহুল উলুমে শরহে বেকায়া (উচ্চ মাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়ে মাওলানা হাসান আল মাহমুদ ভর্তি হন মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ায়। এখান থেকেই সুনামের সঙ্গে দাওরায়ে হাদিস ( মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। এরপর ঢাকার চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জামিয়া হুসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসা হতে ইফতা (ইসলামি আইন শাস্ত্রে উচ্চতর ডিগ্রি) সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া থেকে ফাজিল ও কামিল ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি দেশের ইসলামি ঘরানার প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম আওয়ার ইসলামে চিফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছেন।
রায়হান রাশেদ সহ-সম্পাদক, দৈনিক খবরের কাগজ
তরুণ আলেম মাওলানা রায়হান রাশেদের পড়ালেখার হাতেখড়ি গাঁয়ের মকতবে। এরপর দাওরায়ে হাদিস ও ইফতা পড়েছেন নরসিংদী দারুল উলুম দত্তপাড়া মাদরাসায়। পাশাপাশি অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ থেকে। ২০১৭ সালে ফিচার লেখার মাধ্যমে দৈনিক কালের কণ্ঠে কাজ শুরু করেন তিনি। এরপর দৈনিক নয়া শতাব্দীতে সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে দৈনিক খবরের কাগজের ইসলাম বিভাগের সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
বেলায়েত হুসাইন, রিলিজিয়াস এডিটর, বাংলাদেশের খবর
মকতবের গণ্ডি পেরিয়ে মাওলানা বেলায়েত হুসাইন বুকে ধারণ করেছেন পবিত্র কালামুল্লাহ। মিরপুরের জামিয়া মোহাম্মদিয়া আরাবিয়া থেকে হিফজ সম্পন্ন করে উত্তরার বাইতুস সালাম মাদরাসার কিতাব বিভাগে ভর্তি হন তিনি। এরপর জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া থেকে দাওরা (মাস্টার্স) ও মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়া থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। লেখালেখির প্রতি প্রবল টান সাংবাদিকতায় নিয়ে আসে তাকে। দীর্ঘদিন কাজ করেছেন দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম দৈনিক নয়া দিগন্তে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের খবরের রিলিজিয়াস এডিটর হিসেবে কর্মরত।
নুরুদ্দীন তাসলিম, সহ-সম্পাদক, ঢাকা পোস্ট
হিমালয় কন্যাখ্যাত পঞ্চগড়ে জন্ম নেওয়া নুরুদ্দীন তাসলিম পড়াশোনা করেছেন বগুড়ার জামিয়া ইসলামিয়া দাওয়াতুল শহরদিঘী, মোহাম্মদপুরের জামিয়া ইসলামিয়া ওয়াহিদিয়া, যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া ও মিরপুরের দারুর রাশাদ মাদরাসায়। বিশ্ব ইজতেমার নিউজ কাভারের মাধ্যমে সংবাদিকতায় পা বাড়ান তিনি। তাসলিমের পেশাদার সাংবাদিকতার সূচনা দেশের ইসলামি ঘরনার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইসলাম টাইমসের মাধ্যমে। বর্তমানে তিনি দেশের প্রথম সারির অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোস্টে সহসম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
মুফতি দিদার শফিক, সহ-সম্পাদক, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ
মুফতি দিদার শফিক দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন মুহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া থেকে। এরপর দারুল উলুম মাদানীনগর মাদরাসায় আরবি সাহিত্য এবং জামিয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগ, চকবাজার থেকে তাখাসসুস ফিল ফিকহি ওয়াল ইফতা সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি মাদরাসা-ই-আলিয়া থেকে আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অনার্স এবং নয়াটোলা এইউএন মডেল কামিল মাদরাসা থেকে কামিল সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
কাউসার লাবীব,বার্তা সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম
মাওলানা কাউসার লাবীবের জন্ম ঢাকার অদূরে শিল্প-সাহিত্যের নগরী নরসিংদী জেলায়। তিনি দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন রাজধানীর শায়খ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে। পরবর্তীতে উচ্চতর আরবি ভাষা ও সাহিত্য, হাদিস গবেষণা এবং ইসলামি ফিকহ বিষয়ে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি লেখালেখি ও সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করে নিজের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমে বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
মুফতি উমর ফারুক আশিকী, সহ-সম্পাদক, দৈনিক সকাল
মুফতি উমর ফারুক আশিকী মিরপুরের জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি জামিয়া ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমে তাফসির, জামিয়া কারিমিয়া আরাবিয়া রামপুরায় ইফতা এবং জামিয়া ইসলামিয়া মাখযানুল উলুমে দাওয়াহ অধ্যয়ন করেন। লেখালেখির প্রতি গভীর ভালোবাসা ও আগ্রহ তাকে সাংবাদিকতায় টেনে আনে। কাজ করেছেন বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমে। বর্তমানে তিনি দৈনিক সমকালের সহসম্পাদক (ইসলাম) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।