সারা দেশে সূচিত নজিরবিহীন কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনে প্রাথমিক বিজয় হয়েছে। তবে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক দুরবস্থা, জনগণের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখা, ভারতীয় আদিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করার মধ্য দিয়ে একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে নতুন করে গড়ে তোলার কাজ বাকি রয়েছে।
গণতন্ত্রহীনতা, বাকস্বাধীনতা হরণ, অন্যায়, অবিচার কবলিত দেশকে সংস্কার করে আদর্শ ও উন্নত করার মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ দ্রুত শুরু করা এখন সময়ের দাবি। আমরা সাধারণ জনগণ চাই দেশকে দ্রুত স্থিতিশীল করতে। আর দেশকে স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে নিম্নোক্ত তেরোটি পয়েন্টে এগুতে হবে।
১। আমরা কোনো বিএনপি, জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, জামায়াতে ইসলামী, ছাত্র আন্দোলন কাউকে চাইনা, এবং কোনো ইলেকশন চাইনা, আমরা চাই ছাত্র শহীদ ভাই বোনদেরকে, শিক্ষকদেরকে এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেলদেরকে নিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ সিলেকশন করে এই জাতিকে উপহার দিব।
২। আমরা সংঘাত চাইনা, আওয়ামী লীগ এর মধ্যেও অনেক ভালো মানুষ আছে তাদের জান মালের হেফাজত করব, তবে হ্যাঁ যেই দুর্নীতিবাজগুলো এই সোনার দেশকে লুটপাট করে খেয়েছে তারা যদি লুটপাটের টাকাগুলো ফেরত দিয়ে আত্মসমর্পণ করে তাহলে তাদেরকে জাতি ক্ষমার চোখে দেখবে ঐ অবস্থায় বাংলাদেশে থাকার সুযোগ পাবে ।
৩। ইন্ডিয়ান শক্তি “র” এবং যত ইন্ডিয়ান চাকুরিজীবী রয়েছে তাদেরকে অতিসত্বর ইন্ডিয়াতে ফেরত পাঠাতে হবে এবং এই সরকারের সময় যত জমি বা ফ্যাকটরী অবৈধ ভাবে কিনেছে তাহা তাদের টাকা সরকারের নিকট হইতে জমা নিয়ে সমস্ত কিছু ফেরত প্রদান করতে হবে ।
৪। সেনা প্রধান ও জেনারেলদের গণহত্যা, হেফাজতের গণহত্যা, ছাত্রদেরগণ হত্যা এবং এই সরকারের আমলে আরও যত গুম, খুন, হত্যা হয়েছে, অতিসত্বর তার বিচার শুরু করা জনগণের আদালতের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করা আমাদের দাবি ।
৫। ফখরুদ্দীন সরকারের আমলে যেমন শান্তি ছিল, বা এর চেয়ে উত্তম ছাত্র শিক্ষক এবং শহীদদের অভিভাবকদের কে নিয়ে কিছু ভাল মানুষ সিলেকশ করে যেমন আন্দালিব রহমান পার্থ, এমন করে প্রত্যেক দল থেকে ভাল ভাল মানুষ গুলো বেচে নিয়ে একটি নতুন সরকার দেশকে উপহার দিতে হবে।
৬। দেশের আইন বিভাগকে সম্পুর্ন রূপে আলাদা করে প্রত্যেকটি বিভাগে সৎ ও নিষ্ঠাবান লোকদেরকে নিয়োগ দেওয়া।
৭। দেশের প্রত্যেকটি খাতে যেমন বিমান বাংলাদেশ, রেলওয়ে, হাসপাতাল, অফিস আদালত, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত লোকদেরকে নিয়োগ দিতে হবে ।
৮। প্রত্যেকটি ছাত্রলীগের গুন্ডাদের গুম, খুনের সঠিক বিচার করতে হবে এবং যারা তাদের মদদ দাতা ও যারা তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে তাদের ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দুটি নাম বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলতে হবে।
৯। এই দেশ ৯০% মুসলমানদের দেশ, তাই এই দেশে ইসলামী শাসন চালু করতে হবে। দশম শ্রেণি পর্যন্ত যাতে করে প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রী ইসলামের পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারে সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে। পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মালাম্বীদের জন্য একই পদ্ধতি থাকতে হবে। এ দেশে বসবাসরত ইয়াহুদি, খৃস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধসহ সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
১০। বাংলাদেশের হাসিনার চাটা পুলিশ বাহিনীর ড্রেস বদলাতে হবে এবং ডিবি হারুনের মতো দুর্নীতিবাজ আরও যারা আছে তাদের কে অতিসত্বর বিচারের আওতায় আনতে হবে। কারণ এই দুর্নীতিবাজ পুলিশ বাহিনীর উপর থেকে জনতার বিশ্বাস উঠে গিয়েছে।
১১। সেনাবাহিনী, বিজিবি, নেভি, র্যাব ও দালাল পুলিশ বাহিনীতে যে সমস্ত ইন্ডিয়ান “র” এর দালালরা রয়েছে, তাদেরকে জাতির সাথে মিলে উপযুক্ত শাস্তি দিয়ে তাদের দেশে অতিসত্বর ফেরত দিতে হবে।
১২। সরকারি বেসরকারি প্রত্যেকটি সেক্টর থেকে ঘুষখোর, অসৎ চরিত্র, দুর্নীতিবাজ লোকদেরকে বাদ দিয়ে দেশকে সুন্দর বানানোর লক্ষ্যে নির্বাচন করতে হবে।
১৩। সমস্ত রাজনৈতিক অথবা অরাজনৈতিক সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী, ওলামায়ে বাংলাদেশ, যেমন আল্লামা মামুনুল হক, ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী হুজুর, শায়েখে চরমোনাই জনাব ফয়জুল করিম, আন্দালিব রহমান পার্থ এ ধরনের বিশেষ বিশেষ ব্যাক্তিগণকে সনাক্ত করে যারা কোনো রাজনৈতিক গুস্টিকে সমর্থন করে না বরং দেশকে ভালোবাসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সুন্দর ও দুর্নীতি মুক্ত চায় তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন একটি দল তৈরী করুন।
এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মদির সাথে ফ্যাসিস্ট হাসিনার যে ৩টি কন্ট্রাক্ট হয়েছিল:
১। বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা ব্যাবস্থার মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে হবে ।
২। বাংলাদেশ থেকে ইসলামী শিক্ষা ব্যাবস্থার মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে হবে ।
৩। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে “র” এর লোক ঢুকাতে হবে, যেমন সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী,র্যাব, বিজিবি, ও সন্ত্রাস পুলিশ বাহিনীতে। তাদেরকে খোঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে। যে দেশ ছাত্র ছাত্রী ভাই-বোনদের রক্তে স্বাধীন হয়েছে এই দেশে যাতে করে আবারও কোনো দুষ্কৃতিকারী, দুর্নীতিবাজ অসৎ চরিত্রবান লোক রাষ্ট্রপ্রধান থেকে নিয়ে সর্বনিম্ন পদেও আর কোনো ব্যাক্তি না আসতে পারে সেটাই হলো প্রত্যেকটি জনতার আহ্বান।
বর্তমান সেনা প্রধান এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতির নিকট আকুল আবেদন যে আপনারা জনগণের আস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না ।
লেখক:
মোহাম্মদ আজিজুর রহমান
চেয়ারম্যান, সেইভ দ্যা পিউপল ওফ বাংলাদেশ (এসপিবি)
