শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীর নির্যাতনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে সেই গৃহকর্মী সাদিয়ার (১০)। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর তার মৃত্যু হয়। সাদিয়া পারভীন উপজেলার মুন্সীপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
পুলিশ ও সাদিয়ার পরিবার জানায়, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিল স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরের বিথি টাওয়ারের ছয়তলায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
প্রায় এক বছর যাবত তার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে সাদিয়া পারভীন। কাজে যোগদানের পর থেকে ওই গৃহকর্মীকে বিভিন্ন অজুহাতে শারীরিক নির্যাতন করত শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর।
বিষয়টি জেনেও পরিবারের সদস্যরা কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় দিন দিন বেড়েই যায় তার নির্যাতনের মাত্রা। তার শারীরিক নির্যাতনে ওই শিশুর অবস্থার অবনতি হলে মাঝে-মধ্যে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হতো।
সরকার ভিন্ন নামে ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করছে : জাফরুল্লাহ
গত ২৬ সেপ্টম্বর তার শরীরে মারধর ও যৌনস্থানে আঘাতের কারণে বেগতিক হয়ে পড়ে ওই শিশুর অবস্থা। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ ওই রাত দেড়টার দিকে শহরের বিথি টাওয়ারের ছয়তলা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
সাদিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে শেরপুর সদর হাসপাতাল ও সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। প্রায় এক মাস চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২৩ অক্টোবর বিকাল ৫টার দিকে সাদিয়ার মৃত্যু হয়।
গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বরই পুলিশ উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরকে (৩৫) আটক করে। ওই ঘটনায় নির্যাতিত শিশু সাদিয়া পারভীনের পিতা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রুমানা জামান ঝুমুর জেলহাজতে রয়েছে।
সাদিয়া পারভীনের বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার মেয়ে সাদিয়া ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নির্যাতনের শিকার হয়ে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি আমি শুনেছি। এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।