করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন প্রতিনিয়ত বাড়ছে উদ্বেগ তখন দেশে বাড়ছে অসচেতনতা ও অবহেলা। নমুনা পরীক্ষাও কমতে থাকায় ফের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। এক্ষেত্রে দ্রুত রোগ শনাক্ত আর চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে মহামারি তখনই নিয়ন্ত্রণে আসে যখন প্রতিদিন গড় শনাক্তের হার নেমে আসে পাঁচ শতাংশের নিচে। সে হিসেবে এখনো প্রথম ধাক্কাই সামলে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। আসছে শীত, উঁকি দিচ্ছে দ্বিতীয় ধাক্কার শঙ্কা। দেশে গত আড়াই মাসের মধ্যে সোমবার ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ছাড়িয়েছে দুই হাজারের বেশি।
অথচ করোনার ঝুঁকির কথা যেন বেমালুম ভুলতে বসেছে নগরবাসী। হাটবাজার, অফিস আদালত কিংবা রাস্তাঘাটে ক্রমেই ম্লান হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললে সচেতনার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায় তাদের। কেউ কেউ কর্মস্থালে কাজের সুবিধার্থে মাস্ক না পরার অজুহাত দেখাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, সরকার নো মাস্ক নো সার্ভিস ঘোষণা দিলেও মাস্ক ছাড়াই চলছে সব কাজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড পরিস্থিতি যে কোনও সময়ই বিস্ফোরক হয়ে উঠতে পারে। কাজেই প্রস্তুতি নিতে হবে সেভাবেই।
শীতকালেই যে করোনা আক্রান্তের হার বেড়ে যাবে এমন ধারণাকে প্রাধান্য না দিতে মত দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. রিদওয়ানউর রহমান। তিনি বলেন, আমরা যে করোনার ঢেউয়ের মধ্যে আছি, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েও যেতে পারে আবার কমেও যেতে পারে। এক্ষেত্রে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারণ না করে তা চলমান রাখার ওপর জোর দিয়েছেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
বাতাসে বাড়ছে ‘বিষ’,বিশেষজ্ঞদের জরুরি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে ৬ কোটি মানুষের জন্য প্রতিদিন ৫ লাখ পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমাদের এখানে যদি কমপক্ষে ৫ লাখ পরীক্ষাকে লক্ষ্য ধরি, সেখানে ২০ হাজার লোকের পরীক্ষা করে সে উপাত্তকে আমরা সামগ্রিক দেশের চিত্র হিসেবে উপস্থাপন করতে পারি না। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে পরীক্ষা বাড়ানোর প্রতি জোর দেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই।
তবে দ্বিতীয় ধাপের করোনা মোকবিলায় পরীক্ষা বাড়ানোর পাশাপাশি বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন তারা।
আক্রান্তের হার ও আক্রান্তের ঝুঁকি বিবেচনায় অঞ্চলভিত্তিক ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে তা জনগণকে জানানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন আরেক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে যারা দায়িত্বশীল আছেন, সবাইকে সমন্বিতভাবেই এই কাজগুলো করতে হবে। -সময় সংবাদ