ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo খাগড়াছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে ঢাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিল Logo একটি স্নাইপার বুলেটই যথেষ্ট: বাঙালি নেতাকে কেএনএফ-এর হুমকি! Logo খাগড়াছড়িতে নাশকতার পরিকল্পনা করছে ইউপিডিএফ Logo সামনে ঘোর অন্ধকার-আমরা ঘুমাচ্ছি Logo খাগড়াছড়িতে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে যুবদলের প্রতিষ্ঠা বাষিকী পালিত Logo কিশোরগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল Logo হোসেনপুরে পুলিশের হাত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল বিএনপি নেতারা Logo কিশোরগঞ্জ শহরে অটোরিকশার যানজট ও ফুটপাত দখল ভাঙতে মাঠে নামলেন ডিসি ফৌজিয়া খান Logo রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের মৃত্যুতে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের শোক Logo রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম আকনের মৃত্যুতে প্রবাস থেকে শোক প্রকাশ করলেন সেলিম রেজা

গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ: তিন তদন্ত কমিটি

Doinik Astha
Doinik Astha
  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪
  • / ১০৩৬ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা-জয়দেবপুর রেল জংশনের আউট সিগন্যাল পূর্বচান্দনা-ছোট দেওড়া (কাজী বাড়ি) এলাকায় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ৯৮১ তেলবাহী ও টাঙ্গাইল কম্পিউটার ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুইটি ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৯টি বগি লাইনচ্যুত এবং ৪ জন লোকোমাস্টার আহত হয়েছেন। 

এদিকে ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- টাঙ্গাইল কম্পিউটারের চালক লোকমাস্টার (এলএম) মো. হাবিবুর রহমান সহকারী লোকোমাস্টার মো. সবুজ হোসেন এবং ৯৮১ নম্বর তেলবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার (এলএম) মো. দেলোয়ার হোসেন ও সহকারী লোকোমাস্টার রিপন কুমার বিশ্বাস।

আহত হারিবুর রহমান ও সবুজ হোসেনকে শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অপর দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ রেল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক ছুটে যান।

৯৮১ নম্বর তেলবাহী ট্রেনের সহকারী লোকোমাস্টার রিপন কুমার বিশ্বাস জানান, ৯৮১ নম্বর তেলবাহী গাড়ি যাবে রংপুরে। তারা টঙ্গীতে এসে সাটিং-স্ট্রাটিং কমপ্লিট করে ভিট দেওয়ার পর গাড়ি চালিয়ে ধীরাশ্রমে তাদের প্রপার লাইন (সিগন্যাল) দেওয়া হয় কিন্তু এখানে (জয়দেবপুর) দেওয়া হয়নি। ফলে তারা ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর সিগন্যাল দেওয়া হলে পয়েন্ট বানিয়ে ট্রেন চালানো শুরু করেন। কিন্তু কিছু দূর এসে দেখেন তাদের লাইনেই আর একটি ট্রেন আসতেছে। তখন তারা ইমার্জেন্সি ব্রেক মারলেও অপর দিক থেকে ঐ ট্রেন (টাঙ্গাইল কম্পিউটার) দ্রুত চলে আসায় জীবন বাঁচাতে তারা নিচে মাটিতে লাফ দেয় এবং দুটি ট্রেন এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. আমান উল্লাহ জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে দুটি ট্রেন এসে মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। তিনিসহ আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে যান।

তিনি আরো জানান, ট্রেন দুটি লোকশূন্য থাকায় তেমন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ট্রেন দুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং চালকরা আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জয়দেবপুর স্ট্রেশনের মাস্টার হানিয় আলী জানান, দুর্ঘটনায় আহত ট্রেনের চালকদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে এ সড়কে প্রথমে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকার পর বিকল্প লাইলে ট্রেন চলাচল করছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাভাবিকভাবেই কারো না কারো ভুলের কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে টেকনিক্যাল ভুল থাকলে, সেটি আমরা ধরতে পারবো। এ ঘটনায় কারো ভুল থাকলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তার ব্যবস্থা নেবেন।

তিন তদন্ত কমিটি গঠন:

এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি (উপপরিচালক) আব্দুল্লাহ আল আরেফিন ও জয়দেবপুর জংশনের স্ট্রেশন মাস্টার মো. হানিফ আলী। এ কমিটিকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

এছাড়া রেলওয়ের সিওপিএস মো. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি আঞ্চলিক কমিটি এবং রেলেওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন) সৌমিক শাওন কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। দুই কমিটিকেই তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুর রহমান। হিউম্যান ফেইলিওর অথবা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ট্যাগস :

গাজীপুরে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ: তিন তদন্ত কমিটি

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

ঢাকা-জয়দেবপুর রেল জংশনের আউট সিগন্যাল পূর্বচান্দনা-ছোট দেওড়া (কাজী বাড়ি) এলাকায় শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ৯৮১ তেলবাহী ও টাঙ্গাইল কম্পিউটার ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুইটি ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৯টি বগি লাইনচ্যুত এবং ৪ জন লোকোমাস্টার আহত হয়েছেন। 

এদিকে ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- টাঙ্গাইল কম্পিউটারের চালক লোকমাস্টার (এলএম) মো. হাবিবুর রহমান সহকারী লোকোমাস্টার মো. সবুজ হোসেন এবং ৯৮১ নম্বর তেলবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার (এলএম) মো. দেলোয়ার হোসেন ও সহকারী লোকোমাস্টার রিপন কুমার বিশ্বাস।

আহত হারিবুর রহমান ও সবুজ হোসেনকে শহিদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অপর দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ রেল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক ছুটে যান।

৯৮১ নম্বর তেলবাহী ট্রেনের সহকারী লোকোমাস্টার রিপন কুমার বিশ্বাস জানান, ৯৮১ নম্বর তেলবাহী গাড়ি যাবে রংপুরে। তারা টঙ্গীতে এসে সাটিং-স্ট্রাটিং কমপ্লিট করে ভিট দেওয়ার পর গাড়ি চালিয়ে ধীরাশ্রমে তাদের প্রপার লাইন (সিগন্যাল) দেওয়া হয় কিন্তু এখানে (জয়দেবপুর) দেওয়া হয়নি। ফলে তারা ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর সিগন্যাল দেওয়া হলে পয়েন্ট বানিয়ে ট্রেন চালানো শুরু করেন। কিন্তু কিছু দূর এসে দেখেন তাদের লাইনেই আর একটি ট্রেন আসতেছে। তখন তারা ইমার্জেন্সি ব্রেক মারলেও অপর দিক থেকে ঐ ট্রেন (টাঙ্গাইল কম্পিউটার) দ্রুত চলে আসায় জীবন বাঁচাতে তারা নিচে মাটিতে লাফ দেয় এবং দুটি ট্রেন এসে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী মো. আমান উল্লাহ জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে তিনি ঘটনাস্থল এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় বিকট শব্দে দুটি ট্রেন এসে মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। তিনিসহ আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে যান।

তিনি আরো জানান, ট্রেন দুটি লোকশূন্য থাকায় তেমন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ট্রেন দুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং চালকরা আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জয়দেবপুর স্ট্রেশনের মাস্টার হানিয় আলী জানান, দুর্ঘটনায় আহত ট্রেনের চালকদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণে এ সড়কে প্রথমে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকার পর বিকল্প লাইলে ট্রেন চলাচল করছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, স্বাভাবিকভাবেই কারো না কারো ভুলের কারণেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে টেকনিক্যাল ভুল থাকলে, সেটি আমরা ধরতে পারবো। এ ঘটনায় কারো ভুল থাকলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তার ব্যবস্থা নেবেন।

তিন তদন্ত কমিটি গঠন:

এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি এবং রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি (উপপরিচালক) আব্দুল্লাহ আল আরেফিন ও জয়দেবপুর জংশনের স্ট্রেশন মাস্টার মো. হানিফ আলী। এ কমিটিকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমাদানের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

এছাড়া রেলওয়ের সিওপিএস মো. শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি আঞ্চলিক কমিটি এবং রেলেওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন) সৌমিক শাওন কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। দুই কমিটিকেই তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুর রহমান। হিউম্যান ফেইলিওর অথবা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।