বিতর্কিত ও বহুল আলোচিত ঘুস দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সেই ইউএনও সালমা পারভীনের সব দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে ওই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোনো টেন্ডার ছাড়াই অফিস পিয়নের মাধ্যমে সরকারি বরাদ্দের বিপরীতে কাজ করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা পারভীন। মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ইউএনও সালমা পারভীন ১৩ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পদে যোগদানের পর থেকেই তাহিরপুর উপজেলার হাট বাজার, নৌকাঘাট, সরকারি রাজস্ব আয়যোগ্য সব সেক্টরে অনিয়ম ও দুর্নীতির কালো হাত প্রসারিত করে গোটা উপজেলাকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। তার বিরুদ্ধে জাদুকাটা, রক্তি, পাটলাই নদীর নৌপথজুড়ে টোল ট্যাক্সের নামে চাঁদাবাজি করানো, জাদুকাটা নদীতে শতাধিক ড্রেজারে অবৈধভাবে খনিজ বালি-পাথর উত্তোলন এমনকি নিজের নামেও বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শ্রমিক দিয়ে একাধিক ড্রেজার চালিয়ে কোটি কোটি টাকার খনিজ বালি-পাথর লুটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে নদীর তীরবর্তী মানুষজনের। মানববন্ধন চলাকালে তুজাম্মিল হক নাসরুম বলেন, ইউএনও সালমা পারভীন উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির দ্বিতল ভবনটিকে নিজস্ব ক্ষমতাবলে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষ রূপান্তরিত করেন। উপজেলা পরিষদের ব্যাচেলর কোয়ার্টার, গেজেটেড কোয়ার্টার, উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে দুটি রাস্তাসহ অনেক কাজ নিজের ক্ষমতাবলে করেছেন। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ইউএনও সরকারি ফেসবুক আইডি থেকে উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়ে সাংবাদিক ও তার পরিবারের পেছনে আওয়ামী লীগ নামধারী দুর্বৃত্তদের লেলিয়ে দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে হামলা ও হত্যাচেষ্টা করিয়েছেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- নুরুল আবেদীন, মাহবুব মল্লিক চৌধুরী, তানজিম হাসান সোহাগ, আহমেদ রাজু, সমাজ উন্নয়ন কর্মী রায়হান কবির, আশেক জামান, ছাত্র প্রতিনিধি আবু সাঈদ, সোহরাব প্রমুখ। ইউএনও সালমা পারভীনকে ১০ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার যুগ্ম সচিব ড. আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত আদেশে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বদলি করা হয়। এরপর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সহযোগিতায় বদলির পর সালমা পারভীন তাহিরপুরে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার বক্তব্য জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা পারভীনের সরকারি মোবাইল ফোনে কল করা হলে ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী (ভূমি) জানান, ম্যাডাম তো আছেন তাহিরপুরের দায়িত্বে তবে বুধবার উনি ছুটিতে গেছেন। আমি ভারপ্রাপ্ত ইউএনওর দায়িত্বে রয়েছি। বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর বক্তব্য জানতে সরকারি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।।