দেশপ্রেমকে আমাদের মধ্যে আরো বেশি করে সুসংবদ্ধ, সুদৃঢ় ও ইস্পাত কঠিন করার জন্য আমাদের বেশি বেশি করে বঙ্গবন্ধু চর্চা করতে হবে। যত বেশি আমরা বঙ্গবন্ধু চর্চা করবো ততবেশি আমরা দেশপ্রেমে নিজেদের সুসংহত করতে পারবো বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার।
এ সময় আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে দেশব্যাপী জাতি যেভাবে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করে বিভিন্ন ধরণের কর্মসুচী করছেন, তার মধ্যে আমাদের এই আয়োজন একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস হিসেবে থাকবে। বছরের পর বছর প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু চর্চা হবে বলে তিনি মনে করেন।
স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পর্কে আইজিপি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল, তারা অনেকে রাজাকার ও শান্তি কমিটির লোক ছিল এতে সন্দেহ নেই। তারা পাকিস্তান আর্মিদের এদেশের পথ চিনিয়ে গ্রাম গঞ্জে নিয়ে গিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ও গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। এসব রাজাকারদের একাংশ অর্থবিত্তে ভরপুর হয়েছে। সেই অর্থবিত্ত তারা ১৯৭১ সালের পর বঙ্গবন্ধু হত্যা ও পরবর্তীতে সুবিধাবাদী গোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করতে ব্যয় করেছে। এখনও সেই অর্থ তারা নানান প্রোপাগান্ডা ছড়াতে ব্যবহার করছে। ২৪ বছর পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর দালালি করে যে অর্থ আয় করেছে সেই অর্থবিত্তের প্রভাব এখনও রয়েছে। আমরা মনে করি সময়ের পরিক্রমায় এরা একদিন সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং বাঙালি জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে।
মূখ্য আলোচক হিসেবে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, গৌরবের সাথে দাঁড়িয়ে আপনাদের সামনে কথা বলতে পারছি বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আজ রাজারবাগে দাঁড়িয়ে আমি কম্পিত ও শিহরিত হচ্ছি। পুলিশের যারা ২৫ মার্চ কাল রাতে ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এ সময় তিনি ১৯২০ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আপনারা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, সাহিত্য ও শিল্প নিয়ে যে কাজ করছেন তা আমাদের জন্য অতি গৌরবের। এটা আমাদের সন্তানদের জন্য শুধু আনন্দের নয় একটি দিক নির্দেশনামূলক কাজ।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম-বার বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে কোথাও কোন রকম সংশয় ও তার প্রতি শ্রদ্ধা করার ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র সংশয় ও কার্পন্যতা থাকতে পারে না।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা পুলিশের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। দেশ ও মানুষকে ভালোবাসতে ও শ্রদ্ধা না করতে পারলে পুলিশ বাহিনীতে থেকে কখনও ভালো কিছু করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাস জানতে হবে। আমরা কথায় কথায় সমালোচনা না করে এই জাতি সত্ত্বা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে কিভাবে তৈরি হয়েছে সেটা জানতে হবে। এটা না জানলে আমি বাঙালি এ দাবি করাটা ঠিক হবে না। আসুন বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা রচনাসমূহ দিয়ে তৈরি করা পুস্তক ‘দিশারী’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন। এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : ডিএমপি নিউজ