নেত্রকোণায় লাম্পি স্কিন ভাইরাস, গরু নিয়ে দিশেহারা খামারিরা
আব্দুর রহমান ঈশান/নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণা জেলা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিস ভাইরাস। দ্রুত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় গরু আক্রান্ত হওয়া ও মারা যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। এতে খামারি ও কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই বিপদে প্রাণি সম্পদ বিভাগ থেকে সঠিক সেবা পাচ্ছেন না কৃষকরা, এমন অভিযোগে কর্মকর্তারা বলছেন, ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া থেকে গরু বাঁচাতে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
নেত্রকোণা সদরের গিডুরপাড়া গ্রামের কৃষক মজিবুর রহমানের গোয়ালে ৯টি গরু। এর মধ্যে ১৫ দিন ধরে ৪টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। মজিবুর রহমান জানান, প্রথমে গরুর শারীরিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। পরে শরীরজুড়ে ছোট ছোট টিউমারের মতো ফুলে ওঠে। এ সমস্যা মাথায়, ঘাড়ে ও পায়ে বেশি দেখা দেয়। চামড়া উঠে ঘা দেখা দেয়ায় গরু খাওয়া কমিয়ে দেয়। প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে তদারকি না করায় সময়মত সঠিক সেবা দেয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে গ্রামীণ পদ্ধতিসহ গবাদিপশুর দোকান থেকে ওষুধ নিয়ে ব্যবহার করে অর্থ ব্যয় করেও সুফল পাননি তারা। এ অবস্থায় তিনি গোয়ালের গরু বাঁচানো নিয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন।
একই গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলামের একটি গরু লাম্পি স্কিনে মারা গেছে। শিল্পী আক্তারের তিনটির মধ্যে ২টি ও নুরুজ্জামানের ১টি গরু আক্রান্ত হয়েছে। কৃষকেরা বলেছেন, গ্রামটিতে এরই মাঝে ৮টি গরু মারা গেছে। প্রায় একই চিত্র জেলার ১০ উপজেলায় খামারি ও কৃষকের গোয়ালঘরের।
জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্যমতে জেলায় মোট গরু রয়েছে প্রায় ৬ লাখ। দুই মাসে প্রায় ৪২ হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে ১২ হাজার ৭০০ গরুর ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। তবে কোন গরু মারা যাওয়ার তথ্য নেই কার্যালয়ে। তবে কৃষকেরা বলছেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের দেয়া তথ্যের চেয়ে অনেক বেশি গরু আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, মশা-মাছি ও খাবারের মাধ্যমে এ রোগটি বেশি ছড়ায় জানিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে ৫ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। গত সাত মাসে ৬৩২টি উঠান বৈঠক করা হয়েছে। এছাড়াও টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জনবল সংকটের কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেবা দেয়া হয়ত সম্ভব হচ্ছে না, তবে মাঠপর্যায়ে কর্মরত প্রাণি সম্পদ অফিসের লোকজন প্রতিনিয়ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।