DoinikAstha Epaper Version
ঢাকামঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০২৪
ঢাকামঙ্গলবার ২৬শে নভেম্বর ২০২৪

আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাঁচবিবিতে ছাত্রের জীবিত অভিভাবককে মৃত দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ

Astha Desk
এপ্রিল ৩০, ২০২৩ ৮:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পাঁচবিবিতে ছাত্রের জীবিত অভিভাবককে মৃত দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ

 

 

জয়নাল আবেদীন জয়/জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ

 

 

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের রহমতপুর (রামভদ্রপুর) দারুস সুন্নাহ এবতেদায়ী কওমী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার ২৫জন ছাত্রের জীবিত অভিভাবককে মৃত দেখিয়ে ভূয়া মৃত্যু সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে দাখিল করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার মুহাতিম ও পরিচালক মওলানা আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে।

 

 

তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত নথিতে দেখা যায়, তিনি ঐ মাদ্রাসার ২৫জন ছাত্রের জীবিত পিতাকে মৃত দেখিয়ে কম্পিউটারে স্ক্যানের মাধ্যমে তাদের নামে ভূয়া মৃত্য সনদ তৈরী করেন। উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে ঐ ২৫জন ছাত্রসহ মোট ৪৫জন এতিম ছাত্রের তালিকাটি ভাতা প্রাপ্তির জন্য মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউনুছ আলী মন্ডল এবং মুহাতিম আব্দুল খালেক যৌথ স্বাক্ষর করে জমা দিলে সরকারী ভাতা প্রাপ্ত হয়। যেখানে প্রতিজন এতিম ছাত্র মাসে ২ হাজার টাকা করে পেয়ে থাকেন। রামভদ্রপুর গ্রামের দুলাল হোসেনের স্ত্রী বিলকিছ বেগম বলেন, আমার ছেলে কোরাইশিন অত্র মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। সে প্রায় বাড়িতে এসে বলে, মাদ্রাসার হুজুরেরা আমাকে এতিম বলে থাকে। মা আমার কি বাবা নেই? তিনি বলেন কেন তোমার বাবা জীবিত ও হাকিমপুর ডিগ্রী কলেজে চাকুরী করে।

 

 

একই শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিদ সোয়াইব সিয়ামের বাবা ভূইডোবা গ্রামের সোহেল রানা বলেন, ২০১৮ সালে মাদ্রাসার মুহতামিম আমাকে মৃত দেখিয়ে ছেলেকে এতিম বানিয়ে সরকারি টাকা উত্তোলন করে থাকে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

 

 

একই মাদ্রসার ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী রামভদ্রপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ আল রাফির বাবা আব্দুল আলিম বলেন, আমরা দ্বীনি শিক্ষার জন্য অত্র মাদ্রাসায় আদরের সন্তানকে দিয়েছি। প্রতি মাসের ছেলের পড়াশুনা বাবদে ৩’শ টাকা করে মুহতামিমকে দিয়ে থাকি। যখন জানতে পারলাম ২০১৪ আমি মারা গেছি, তখন এই হুজুরের প্রতি আমার ঘৃণা জন্মেছে।

আরো পড়ুন :  নলছিটিতে নদী-খালে অবৈধ বাধ অপসারণ ও লীজ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

 

 

এতিমখানার সভাপতি ইউনুছ আলী জানান, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে জমাদানকৃত তালিকায় দেখানো স্বাক্ষরটি আমার না। ছাত্রদের অভিভাবকের মৃত্যু সনদ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

 

 

মুহাতিম আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের জানান, এসব ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তবে তিনি সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে গোপনে আপোষরফার প্রস্তাবের একপর্যায়ে অকোপটে জালিয়াতির মাধ্যমে জালসনদ তৈরী করার কথা স্বীকার করেন এবং এতিম বাচ্ছাদের মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি একাজটি করেছেন বলে জানান। তবে এ বিষয়ে সংবাদ না করার জন্য অনুরোধ জানান।

 

 

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোছাঃ শাহিনুর আফরোজ জানান, এ ঘটনা জানার পর মাদ্রাসায় গিয়ে দুইজন ছাত্রের স্বীকারোক্তিতে সত্যতা পাওয়া যায়। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে অধিকতর তদন্ত করার জন্য স্থানীয় বাগজানা ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাগজানা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জম্ম মৃত্যু সনদ প্রদানে একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। কিন্তুু ঐ মাদ্রাসার মুহাতিম ইউনিয়ন পরিষদের সীল ও স্বাক্ষর জাতিয়াতি করে জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বানিয়ে মৃত্যু সনদ তৈরী করেছেন। তিনি মৃত্যু সনদে একই মৃত্যু নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে সমাজসেবা থেকে অর্থ গ্রহণ করছেন।

 

উপজেলা সমাজ সেবা অফিস থেকে পত্র পেয়ে আমি এলাকার ইউপি সদস্য ও গ্রামপুলিশকে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। প্রতিবেদন পেলে সমাজসেবা অফিসে পাঠিয়ে দিব।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরমান হোসেন বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:০০
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:১৪
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০৫
  • ১১:৪৯
  • ৩:৩৫
  • ৫:১৪
  • ৬:৩১
  • ৬:২০