ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনাকালে বগুড়ার শেরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিয়াকত আলীর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। শনিবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শেরপুরের নলডেঙ্গীপাড়া-গজারিয়া গ্রামে বাঙালী নদীতে বালু মহল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসের চেইনম্যান উজ্জল কুমার পাল ও নৈশপ্রহরী মঞ্জুরুল হক বাচ্চু। পরে তাদের স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঞ্জুরুল হক বাচ্চু বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৯০ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরে রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আট জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলেন- শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মো. ফরহাদ হোসেন, ওসমান গনি, গজারিয়া মধ্যপাড়ার আলম প্রামাণিক, ইব্রাহিম প্রামাণিক, শাহীন শাহ, মেহেদী, খামারকান্দি ইউনিয়নের নলডেঙ্গী গ্রামের রুবেল আহমেদ এবং একই গ্রামের ফরহাদ হোসেন।
২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ১১২৫ জন, ২৩ জনের মৃত্যু
জানা যায়, শনিবার উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় অবৈধ বালু মহালে অভিযান চালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ। অভিযানে গিয়ে বালু মহল এলাকায় বালু উত্তোলনকারীদের অনেক ডাকাডাকি করে তাদের না পেয়ে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত পাইপ অপসারণকালে স্থানীয় কিছু লোক এসে বাধা দেয়। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ইএনও’র গাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
এতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসের চেনম্যান উজ্জল মোহন্ত ও নৈশ্যপ্রহরী মুঞ্জুরুল হক বাচ্চু গুরুতর আহত হয়। পরে শেরপুর থানার পুলিশ এসে ইউএনও ও আহত কর্মচারিদের উদ্ধার করে।
বাঙালী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী বালুদস্যুরা ও তাদের ভাড়াটে লোকজন এই হামলা করেছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, ঘটনার দিন দুপুরের পর থেকেই উপজেলার শেরুয়া বটতলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। এ সময় খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া-নলডাঙ্গি এলাকায় বাঙালি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর আসে। পরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু সেখানে কাউকে না পাওয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সরঞ্জামগুলো খোলা হচ্ছিল।
এ সময় বালু উত্তোলনকারীদের ভাড়াটে লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের ঘিরে ফেলে। পরে গাড়িতে হামলা করে। এসময় উজ্জল ও বাচ্চু বাধা দিতে গেলে তাদেরকে বেধড়ক মারধর করে।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ইউএনওসহ আহতদের উদ্ধর করি। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আটক করে হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।