ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
Logo রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া চষে বেড়াচ্ছে এমপি প্রার্থী ড. ফয়জুল হক Logo ফুলবাড়ীয়ায় জামায়াতের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ Logo ময়মনসিংহে ফিশারিতে দুস্কৃতিকারীর বিষ প্রয়োগে:- ২০ লাখ টাকার মাছ নিধন Logo নীলফামারীতে নদী থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার Logo ফিশারিতে বিষ প্রয়োগে ২০ লাখ টাকার মাছ নিধন Logo গোসাইবাজারে সংঘর্ষ: ব্যবসায়ীদের ধাওয়া, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ Logo পানছড়িতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেলেন সেনাপ্রধান Logo আইফোন ১৭ সিরিজের ডিজাইনার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আবিদুর চৌধুরী Logo ওএসডির ছয় মাস পর পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ডা. সাইফুল ইসলাম! Logo সুনামগঞ্জে এনসিপির যুগ্ম-সমন্বয়ক যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

বন্ধ নগর ভবনে পুড়লো কোটি টাকার তেল

Astha DESK
  • আপডেট সময় : ১১:১৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ১১২০ বার পড়া হয়েছে

বন্ধ নগর ভবনে পুড়লো কোটি টাকার তেল

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মচারীর আন্দোলনের কারণে চলতি বছরের ১৪ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৪০ দিন নগর ভবনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের কারণে ৪০ দিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বন্ধ ছিল। তখন এক দিনও অফিসে আসেননি কর্মকর্তাদের অনেকে। অথচ তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা গাড়ির বিপরীতে প্রতিদিন ১৪–১৫ লিটার তেল খরচ দেখিয়েছেন কর্মকর্তারা। প্রশ্ন উঠছে অফিস বন্ধ থাকার পরও এই তেল কিভাবে পুড়লো?গেল কোথায় তেল?

সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রতি মাসে জ্বালানি খাতে খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এপ্রিল, মে ও জুন মাসের খরচ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মে ও জুন মাসে নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ থাকলেও খরচ হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের সমান তেল। অথচ এই সময়ে কার্যত কোনো অফিস কার্যক্রম ছিল না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ ধরনের কার্যকলাপ শুধু অনিয়ম, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। একজন নাগরিকের করের টাকায় পরিচালিত এই সংস্থায় এত বড় অনিয়মের ঘটনা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, কেউ যদি অফিস না করেও তেল ইস্যু করে থাকেন, তাহলে সেটা নিতান্তই অন্যায়। এ ধরনের বিষয় খতিয়ে দেখবো।

উল্লেখিত সময়ে সিটির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরের ব্যবহৃত স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল গাড়িটির জন্য প্রতিদিন ১৫ লিটার জ্বালানি খরচ করেছে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হিসাবে ৪০ দিনে ৬শ লিটার জ্বালানি ব্যবহার করেছেন, যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৬১ হাজার ২শ টাকা।

এই গাড়ির চালক কামরুল হাসান বলেন, ‘আন্দোলনের সময় প্রতিদিন বের হইনি, প্রয়োজন হলে স্যারকে নিয়ে বের হয়েছি।’ অথচ করপোরেশনের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, গাড়িটি প্রতি লিটার জ্বালানিতে গড়ে ৮ কিলোমিটার চলে। সে হিসাবে ১৫ লিটার তেল দিয়ে ১শ ২০ কিলোমিটার প্রতিদিন চলেছে বলেই হিসাব দেখানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো নগর ভবন বন্ধ থাকলে এই দৈনিক ১শ ২০ কিলোমিটার যাত্রা কোথায় হয়েছে?

প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান একই সময় প্রতিদিন ১৪ লিটার করে মোট ৫শ ৬০ লিটার তেল নিয়েছেন। এতে করপোরেশনের খরচ হয়েছে ৫৭ হাজার ১শ ২০ টাকা। তিনি দাবি করেন, নগর ভবন বন্ধ থাকলেও তিনি ঢাকা ওয়াসা ভবন, সচিবালয় ও কর্মচারী হাসপাতালে অফিস করেছেন। তাই তেল নিয়েছেন।

কিন্তু করপোরেশনের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, আন্দোলনের সময় করপোরেশনের বাইরে নিয়মিত অফিস চালানোর মতো কোনো অবকাঠামোই ছিল না। কিছু জরুরি সভা সচিবালয় ও ওয়াসা ভবনে হয়েছে মাত্র।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির যান্ত্রিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বতর্মানে সংস্থাটিতে কর্মকর্তারা ৯১টি গাড়ি ব্যবহার করছেন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন ১ষ ১টি। এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত যানবাহনসহ বাকি কাজে ব্যবহৃত মোট গাড়ি ৪শ ১৮টি। সংস্থাটিতে বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বর্জ্য-উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহারের গাড়ি মোট ৬শ ১০টি। তথ্য বলছে, প্রতি মাসে জ্বালানি বাবদ

সংস্থাটির খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এসব যানবাহনের পেছনে শুধু জ্বালানি বাবদই বছরে ৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে।

তত্ত্বাবধায়ক মামুন উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, করপোরেশন বন্ধ থাকলেও করপোরেশনের সিংহভাগ কর্মকর্তা অফিস করেছেন। তাই তেল ইস্যু করা হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জ্বালানি ইস্যুকারীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। যিনি তেল ইস্যু করেন, তাঁর বিরুদ্ধেও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কর্মকর্তারা যখন অতিরিক্ত তেলের চাহিদা দেন, তা যাচাই-বাছাই না করে ইস্যুকারী কর্মকর্তা সেই বরাদ্দ অনুমোদন করেন।

তিনি আরও বলেন, এরপর বাস্তবে ওই তেলের পুরোটা ব্যবহৃত না হয়ে কিছু অংশ বিক্রি করেন। এই প্রক্রিয়ায় চালকেরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হন, তেমনি অভিযোগ রয়েছে—জ্বালানি ইস্যুকারী কর্মকর্তাও সেই টাকার অংশবিশেষ ভাগ পান। ফলে পুরো ব্যবস্থাটিতে একটি যোগসাজশের চক্র গড়ে উঠেছে, যা করপোরেশনকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনগণের অর্থের যোগসাজশমূলক, অবৈধ, অনৈতিক ও প্রতারণামূলক আত্মসাতের এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সরাসরি যাঁরা বিধিবহির্ভূতভাবে লাভবান হয়েছেন, তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা এ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দাপ্তরিক প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের কেউ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নন।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।

ট্যাগস :

বন্ধ নগর ভবনে পুড়লো কোটি টাকার তেল

আপডেট সময় : ১১:১৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বন্ধ নগর ভবনে পুড়লো কোটি টাকার তেল

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মচারীর আন্দোলনের কারণে চলতি বছরের ১৪ মে থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ৪০ দিন নগর ভবনের সেবা কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনের কারণে ৪০ দিন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বন্ধ ছিল। তখন এক দিনও অফিসে আসেননি কর্মকর্তাদের অনেকে। অথচ তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা গাড়ির বিপরীতে প্রতিদিন ১৪–১৫ লিটার তেল খরচ দেখিয়েছেন কর্মকর্তারা। প্রশ্ন উঠছে অফিস বন্ধ থাকার পরও এই তেল কিভাবে পুড়লো?গেল কোথায় তেল?

সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে প্রতি মাসে জ্বালানি খাতে খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এপ্রিল, মে ও জুন মাসের খরচ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মে ও জুন মাসে নগর ভবন ৪০ দিন বন্ধ থাকলেও খরচ হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের সমান তেল। অথচ এই সময়ে কার্যত কোনো অফিস কার্যক্রম ছিল না।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ ধরনের কার্যকলাপ শুধু অনিয়ম, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়। একজন নাগরিকের করের টাকায় পরিচালিত এই সংস্থায় এত বড় অনিয়মের ঘটনা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাবের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মোঃ শাহজাহান মিয়া বলেন, কেউ যদি অফিস না করেও তেল ইস্যু করে থাকেন, তাহলে সেটা নিতান্তই অন্যায়। এ ধরনের বিষয় খতিয়ে দেখবো।

উল্লেখিত সময়ে সিটির পরিবেশ, জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকেরের ব্যবহৃত স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল গাড়িটির জন্য প্রতিদিন ১৫ লিটার জ্বালানি খরচ করেছে বলে নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। হিসাবে ৪০ দিনে ৬শ লিটার জ্বালানি ব্যবহার করেছেন, যার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৬১ হাজার ২শ টাকা।

এই গাড়ির চালক কামরুল হাসান বলেন, ‘আন্দোলনের সময় প্রতিদিন বের হইনি, প্রয়োজন হলে স্যারকে নিয়ে বের হয়েছি।’ অথচ করপোরেশনের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, গাড়িটি প্রতি লিটার জ্বালানিতে গড়ে ৮ কিলোমিটার চলে। সে হিসাবে ১৫ লিটার তেল দিয়ে ১শ ২০ কিলোমিটার প্রতিদিন চলেছে বলেই হিসাব দেখানো হয়েছে। প্রশ্ন হলো নগর ভবন বন্ধ থাকলে এই দৈনিক ১শ ২০ কিলোমিটার যাত্রা কোথায় হয়েছে?

প্রধান সমাজকল্যাণ ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান একই সময় প্রতিদিন ১৪ লিটার করে মোট ৫শ ৬০ লিটার তেল নিয়েছেন। এতে করপোরেশনের খরচ হয়েছে ৫৭ হাজার ১শ ২০ টাকা। তিনি দাবি করেন, নগর ভবন বন্ধ থাকলেও তিনি ঢাকা ওয়াসা ভবন, সচিবালয় ও কর্মচারী হাসপাতালে অফিস করেছেন। তাই তেল নিয়েছেন।

কিন্তু করপোরেশনের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, আন্দোলনের সময় করপোরেশনের বাইরে নিয়মিত অফিস চালানোর মতো কোনো অবকাঠামোই ছিল না। কিছু জরুরি সভা সচিবালয় ও ওয়াসা ভবনে হয়েছে মাত্র।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির যান্ত্রিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বতর্মানে সংস্থাটিতে কর্মকর্তারা ৯১টি গাড়ি ব্যবহার করছেন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করছেন ১ষ ১টি। এ ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজে নিয়োজিত যানবাহনসহ বাকি কাজে ব্যবহৃত মোট গাড়ি ৪শ ১৮টি। সংস্থাটিতে বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বর্জ্য-উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহারের গাড়ি মোট ৬শ ১০টি। তথ্য বলছে, প্রতি মাসে জ্বালানি বাবদ

সংস্থাটির খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা। এসব যানবাহনের পেছনে শুধু জ্বালানি বাবদই বছরে ৬০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে।

তত্ত্বাবধায়ক মামুন উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, করপোরেশন বন্ধ থাকলেও করপোরেশনের সিংহভাগ কর্মকর্তা অফিস করেছেন। তাই তেল ইস্যু করা হয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জ্বালানি ইস্যুকারীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। যিনি তেল ইস্যু করেন, তাঁর বিরুদ্ধেও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কর্মকর্তারা যখন অতিরিক্ত তেলের চাহিদা দেন, তা যাচাই-বাছাই না করে ইস্যুকারী কর্মকর্তা সেই বরাদ্দ অনুমোদন করেন।

তিনি আরও বলেন, এরপর বাস্তবে ওই তেলের পুরোটা ব্যবহৃত না হয়ে কিছু অংশ বিক্রি করেন। এই প্রক্রিয়ায় চালকেরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হন, তেমনি অভিযোগ রয়েছে—জ্বালানি ইস্যুকারী কর্মকর্তাও সেই টাকার অংশবিশেষ ভাগ পান। ফলে পুরো ব্যবস্থাটিতে একটি যোগসাজশের চক্র গড়ে উঠেছে, যা করপোরেশনকে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জনগণের অর্থের যোগসাজশমূলক, অবৈধ, অনৈতিক ও প্রতারণামূলক আত্মসাতের এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সরাসরি যাঁরা বিধিবহির্ভূতভাবে লাভবান হয়েছেন, তাঁদের পাশাপাশি যাঁরা এ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দাপ্তরিক প্রক্রিয়াকরণ ও অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের কেউ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নন।’ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত।