চিরচেনা পৃথিবীতেই মানুষের বসবাস। পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদ, জলবায়ু অনুকূলে থাকায় মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। তবে এক সময় জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিঃশেষ হয়ে গেলে তা বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। সেই ধারণা থেকেই নতুন পৃথিবীর সন্ধানে নেমেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। নিরাশও হননি, আবিস্কার করেছেন ‘সুপার পৃথিবী’।
‘জিজে ৭৪০’ নামের একটি গ্রহ, যাকে ‘সুপার পৃথিবী’র নাম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের খোঁজ পেয়েছেন। কেন ‘সুপার পৃথিবী’ বলছেন, এর পেছনেও যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন।
তাদের মতে, পৃথিবীর দ্বিগুণ থেকে ১০ গুণ আকারের গ্রহকে বলা হয় সুপার আর্থ বা সুপার পৃথিবী। সেই অর্থে, এই গ্রহের ভর পৃথিবীর প্রায় তিন গুণ। সৌরজগতের চতুর্থ বড় গ্রহ নেপচুন। এর থেকে আকারে সামান্য ছোট হবে নতুন এই গ্রহটি। তবে এটি মাটি পাথর দিয়ে তৈরি নয়, বরং গ্যাসের গোলাও হতে পারে।
মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা বলছেন, নতুন এই ‘সুপার পৃথিবী’ র অবস্থান আমাদের পৃথিবী থেকে ৩৬ আলোকবর্ষ দূরে। পৃথিবীতে এক বছর ৩৬৫ দিনে হয়, ওই গ্রহে বছর পূর্ণ হয় মাত্র ২ দিন ৯ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে। এর মানে গ্রহটি ওই সময়ের মধ্যেই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।
গ্রহটি থেকে ‘সূর্য’ অনেক বড় দেখাবে। সেই সঙ্গে গাছপালাও সবুজ নয়, হবে কালো রঙের। কিন্তু মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে।
বিজ্ঞানীরা জানান, গ্রহটিতে প্রাণের সম্ভাবনাও অসম্ভব নয়। তবে সাধারণ মানুষ বসবাসের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু জটিল। কারণ জিজে ৭৪০-এর মতো গ্রহগুলো রেড ডোয়ার্ফের (মৃত ঠান্ডা তারা) কাছাকাছি থাকে। তাই তারার সঙ্গে একই বেগে সমান গতিতে ঘূর্ণিপাক খায় গ্রহটিও। এর ফলে নতুন গ্রহের একদিক সবসময় ফুটন্ত গরম থাকে, আর অন্যদিক হয় চরম ঠান্ডা। যা সবকিছু জমিয়ে দেয়। মানে গ্রহটির একদিকে সবসময় দিন, আর অন্যদিকে সবসময় রাত থাকে।
তাই মানুষের বসবাসে ক্ষেত্রে তাপমাত্রার এই চরম বৈষম্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে। যা দূর করতে পারে বায়ুমন্ডলই। পৃথিবী এবং শনির মতো যদি বায়ুমণ্ডল থাকে তবেই কিছুটা আশার আলো দেখা যাবে। সেই সঙ্গে আরও বেশ কিছু বিষয় অনুকূল হলে সেখানে প্রাণের সঞ্চার হতেই পারে আশা প্রকাশ করেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।