প্রথম থেকেই সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তার পরিবার ও ফ্যানরা। তিনি আত্মহত্যা করেছেন-এটা বিশ্বাস করতে চাননি কেউ। এখন এটা বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না চিকিৎসকরাও। তারা এর যুক্তি হিসেবে বলছেন, সুশান্তের গলায় যে গভীর দাগ দেখা গেছে, তা কিছুতেই প্রমাণ করে না যে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
মুম্বাই পুলিশের কাছ থেকে অভিনেতার মৃত্যু তদন্তের ভার ভারতের গোয়েন্টা সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পর দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসকে (এইমস) নতুন করে সুশান্তের ভিসেরা পরীক্ষা করে মৃত্যুর কারণ নির্ধারণের দায়িত্ব দেয়া হয়।
ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাতে ভিসেরা পরীক্ষার রিপোর্ট তুলে দিয়েছে এইমস। তাতে সাফ জানানো হয়েছে, অভিনেতার ওপর বিষ প্রয়োগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্রের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফরেনসিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এটি একটি খুনের ঘটনা। চিকিৎসকরা বলেছেন, সুশান্তের গলার দাগ কোনোভাবেই প্রমাণ করে না যে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, যদি তিনি আত্মঘাতী হতেন, তবে গলার দাগ আরও ওপরের দিকে যেত। কিন্তু যে জায়গায় গভীর কালো দাগ ছিল, তা খুনের জন্যই হয়েছে। অর্থাৎ, এটা দেখে মনে হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করেই হত্যা করা হয়েছে।
কুপার হাসপাতাল যেখানে সুশান্তের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল, সেখান থেকেই রিপোর্ট বিকৃত করার সম্ভাবনা দেখছেন চিকিৎসকরা। কোনো বিষক্রিয়ার প্রমাণ না মিললেও খুনের তত্ত্ব একেবারে উড়িয়ে দিতে পারছেন না এইমসের চিকিৎসকের দল।
সুশান্তের যে ভিসেরা রিপোর্ট আসে, সেখানে কোনো বিষক্রিয়ার প্রমাণ মেলেনি। সেই রিপোর্টে বলা হয় আস্ফিক্সিয়া অর্থাৎ শ্বাসরোধের কারণে অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, মৃত্যুর সময় কোনো ধস্তাধস্তিরও প্রমাণ মেলেনি বলে জানা যায়। অভিনেতার নখের নিচ থেকেও সন্দেহজনক কোনো প্রমাণ মেলেনি।
গত ১৪ জুন বান্দ্রার বাড়ি থেকে অভিনেতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছিল, সুশান্ত আত্মহত্যাই করেছেন।
কিন্তু বিষপ্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন সুশান্তের পরিবারের লোকজন ও ফ্যানরা।
মুম্বাইয়ের হাসপাতালে যেভাবে প্রয়াত অভিনেতার ময়নাতদন্ত করা হয়, তা নিয়ে যদিও আগেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিল এমসের একটি প্যানেল, তারপরও বিষ প্রয়োগের প্রমাণ না মেলায় আপাতত আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগটিই খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।