নিউজ ডেস্ক : স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদধারী স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়োগ বিধি সংশোধন করে টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ ১১তম গ্ৰেড প্রদানের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের নেতারা।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. আখিল উদ্দিন, সদস্য সচিব মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আখিল উদ্দিন বলেন, আমরা সমগ্র বাংলাদেশে এক লাখ বিশ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র (ইপিআই) সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর মাধ্যমে শিশু ও মহিলাদের টিকা প্রদান কাজে নিয়োজিত। ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগ- শিশুদের যক্ষ্মা, পোলিও, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা এবং ১৫-৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের ৫ (পাঁচ) ভোজ টিটি/টিডি টিকা প্রদান করি। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন প্রোগ্রামে ভিটামিন এ খাওয়ানো, কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো, যক্ষ্মা রোগি অনুসন্ধান, ডটস পদ্ধতির মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগীদের ঔষধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করি। মাঠ পর্যায়ে কোভিড-১৯ এর টিকাদান ও মহিলাদের জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধের টিকা আমরাই প্রদান করি। আমাদের টিকাদান কার্যক্রমের সফলতার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ সরকার অর্জন করেছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কার এমডিজি এ্যাওয়ার্ড, ধনুষ্টংকার নির্মূল সনদ, পোলিও নির্মূল সনদ এবং সর্বশেষ গ্যাভী কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারকে ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কার প্রদানসহ আরও অন্যান্য পুরস্কার প্রদান করেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৭ সাল থেকে আমাদের সমগ্রেডে চাকরিরতদের সময়ের পরিক্রমায় বেতন সুযোগ সুবিধা গ্রেড বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসলেও সৃষ্টির সেরা জীব মানব শিশু স্বাস্থ্য ও মাতৃ স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার পরও তৃণমূলের স্বাস্থ্য সহকারীদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন এখনো হয়নি। তাই আমাদের বেতন বৈষম্য নিরসণের লক্ষ্যে নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক/সমমান ১৩তম গ্রেড এবং ৪ বছর মেয়াদী ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা ট্রেনিং সাপেক্ষে টেকনিক্যাল পদমর্যাদা সহ ১১তম গ্রেড প্রদান করতে হবে। তাছাড়া স্বাস্থ্য সহকারীদের এমআইএস’র মাধ্যমে নীড় পাতায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আখিল উদ্দীন বলেন, ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার বাস্তবায়ন এবং ২০২০ সালের তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিবের সঞ্চালনায় ডিজি ও অন্যান্য কর্মকর্তা এবং আমাদের নেতাদের উপস্থিতিতে এক আলোচনা সভায় আমাদের দাবি সমূহ মেনে নিয়ে রেজুলেশনের মাধ্যমে যে সমঝোতা হয়, যা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ওই রেজুলেশনটি বাস্তবায়ন করার জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করে দাবি আদায় না হলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ইপিআই সম্প্রসারিত টিকাদান কার্যক্রম বর্জনসহ অন্যান্য সকল প্রকার কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবো। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবি সরকারি ভাবে প্রজ্ঞাপণ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কর্মসূচী অব্যাহত রাখবেন বলে জানান তিনি।
তথ্য সহায়তায়: মাসুম আহমেদ