প্রথমার্ধে যেভাবে আরব আমিরাতকে পেয়েছিলো, দ্বিতীয়ার্ধে সেভাবে পায়নি। বরং, দ্বিতীয়ার্ধে আরব আমিরাত ছিল দুর্দান্ত। যার ফলে প্রথমার্ধে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিকে ৪ গোল দিলেও, দ্বিতীয়ার্ধে আর মাত্র একটি গোল দিতে পারলো লিওনেল মেসিরা। তবুও, শেষ পর্যন্ত আরব আমিরাতকে ৫-০ গোলের মালা পরিয়ে বিশ্বকাপের আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ শেষ করলো আর্জেন্টিনা।
বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ঝালাই করে নিতে আজ আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামে লিওনেল মেসির দল। আবুধাবির মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথমার্ধেই ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় বিশ্বকাপের সুপার ফেবারিট আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করেছেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। বাকি দুই গোলের একটি করে করেছেন লিওনেল মেসি এবং হুলিয়ান আলভারেজ। দ্বিতীয়ার্ধের একমাত্র গোলটি করেন জোয়াকিন কোরেয়া।
হালকা ইনজুরি সমস্যা ছিল ডি মারিয়ার। দেখার ছিল তিনি মাঠে নামতে পারেন কি না। তাকে মাঠে নামানো হলেও আজকের প্রস্তুতি ম্যাচের স্কোয়াডেই রাখা হয়নি পাওলো দিবালাকে।
আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচটি শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায়। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ হলেও, যে ম্যাচ খেলতে নেমেছেন মেসি, তাতে তো আর দর্শকরা ঘরে বসে থাকতে পারে না। মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে।
খেলার ১৮তম মিনিটেই গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন হুলিয়ান আলভারেজ। লিওনেল মেসির কাছ থেকে বল পেয়েই বক্সের মধ্যভাগ থেকে ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শটে আরব আমিরাতের জালে বল জড়ান আলভারেজ।
২৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন ডি মারিয়া। বক্সের মধ্যেই মার্কোস আকুনার কাছ থেকে বল পান তিনি। ডিফেন্ডার এবং গোলরক্ষককে কাটিয়ে বাম পায়ের আলতো ছোঁয়ায় বলটি জালে জড়িয়ে দেন তিনি। ৩৬ মিনিটে আবারও গোল। এবারও গোল করেন ডি মারিয়া। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের কাছ থেকে বল পেয়ে একদম ছোট বক্সের ভেতর থেকে বামপায়ের শটে গোল করেন এই জুভেন্টাস তারকা।
৪৪ মিনিটে গোল করেন লিওনেল মেসি। অ্রাঞ্জেল ডি মারিয়ার পাস থেকে বল পান তিনি। বক্সের ভেতরে বলটি নিয়ে গিয়ে ডান পায়ের শট নেন মেসি। ৪-০ ব্যবধান নিয়েই প্রথমার্ধের বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা এবং আরব আমিরাত।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আর্জেন্টিনার জালে বল জড়িয়েই দিয়েছিল প্রায় আরব আমিরাত। কিন্তু দুর্ভাগ্য ভর করায় গোলটি পেলো না। ৪৮তম মিনিটে আর্জেন্টিনার রক্ষণ তছনছ করে হারিব আবদুল্লাহ সুহাইল বাম পায়ের দুর্দান্ত শট নেন। বলটি গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকেও ফাঁকি দেয়। কিন্তু পোস্টকে ফাঁকি দিতে পারেনি। উপরের বারে লেগে বল ফেরত আসে।
ফিরতি বল পেয়ে যান ফ্যাবিও লিমা। তিনি ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দেন আবদাল্লা রমাদানকে। তিনি বাম পায়ের মাটি কামড়ানো শট নিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মার্টিনেজ।
৪-০ গোলে পিছিয়ে থাকার কারণে আরব আমিরাত দ্বিতীয়ার্ধে বেশ চাপ সৃষ্টি করেই খেলেছে। তবে আর্জেন্টিনা সতর্ক ছিল কোনোভাবে যেন কেউ ইনজুরিতে না পড়েন। ৬০ মিনিটে এসে পঞ্চম গোলটি করে বসেন কোরেয়া। রদ্রিগো ডি পলের কাছ থেকেই বক্সের মধ্যে বল পেয়ে যান কোরেয়া এবং ডান পায়ের শটে জালে বল জড়ান তিনি।
৬২ মিনিটে খালেদ ইব্রাহিমের কাছ থেকে বল পেয়ে দুরহ কোন থেকে শট নেন সাইও কানেদো। কিন্তু বলটি বাইরে চলে যায়। ৭২ মিনিটে মেসি দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার। কিন্তু বল চলে যায় বক্সের ওপর দিয়ে।
৭৮ মিনিটে ফ্রি কিক পেয়েছিলেন মেসি। তার বাম পায়ের অ্যাঙ্গেল শটটি ছিল দুর্দান্ত। কিন্তু জাল খুঁজে পায়নি। বাইরে দিয়ে চলে যায়।
৮১ মিনিটেও আরব আমিরাত নিশ্চিত গোলের সুযোগ মিস করে। এ সময় গোলরক্ষক মার্টিনেজ অসাধারণ দক্ষতায় দলকে বাঁচান। মাজিদ রশিদর কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মাঝ বরাবর থেকে শট নেন আলি সালেহ। কিন্তু মার্টিনেজ থাকলে তো জালে বল প্রবেশ করবে না। তাই হলো।
শেষ পর্যন্ত ৫-০ গোলের জয় নিয়েই বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি সারলো আর্জেন্টিনা।