নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার আমাইড় ইউনিয়নের গণকাহার গ্রামে ডারকা দিঘি নামক একটি জলাশয়ে ভাসমান অবস্থায় এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। নিহত ব্যক্তি আমজাদ হোসেন (৫৫), তিনি একই গ্রামের মৃত কাশেম আলীর ছেলে। তার এমন রহস্যজনক মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে আমজাদ হোসেন প্রতিদিনের মতো গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে বের হন। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও তিনি আর ফেরেননি, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। প্রথমে তারা ভেবেছিলেন, হয়তো তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও তার সন্ধান না পাওয়ায় পরিবার ও স্থানীয়রা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
এক পর্যায়ে, অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গ্রামের পাশের ডারকা দিঘিতে তার নিথর দেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা দ্রুত দিঘিতে নেমে মরদেহ উদ্ধার করেন এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পত্নীতলা থানার পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমজাদ হোসেন প্রায়ই এই দিঘির আশপাশে ঘাস কাটতে যেতেন। এটি একটি পুরনো জলাশয়, যা একসময় কৃষিকাজের জন্য পানি সরবরাহে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে সেখানে পানি তুলনামূলক কম থাকায় স্থানীয়রা গোসল করতেও যেতেন না।
নিহতের পরিবারের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো তিনি পানিতে হাত-মুখ ধোয়ার জন্য নেমেছিলেন কিংবা গোসল করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ডুবে যান। তবে এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি একটি দুর্ঘটনা বলেই মনে হচ্ছে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। যদি কোনো সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত আরও বিস্তৃত করা হবে।” ইতোমধ্যে থানায় অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
নিহতের মৃত্যুতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আমজাদ হোসেন একজন সহজ-সরল মানুষ ছিলেন এবং তার কারও সঙ্গে তেমন কোনো বিরোধ ছিল না। যদিও বেশিরভাগ স্থানীয় বাসিন্দা এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখছেন, তবে তারা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা শোকে মুহ্যমান এবং প্রশাসনের কাছে দ্রুত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন, যাতে মৃত্যুর বিষয়ে কোনো ধোঁয়াশা না থাকে।
এমকে/আস্থা