পার্বত্য জেলা পরিষদে ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়ন কাজ
মোফাজ্জল হোসেন ইলিয়াছঃ
তিন পার্বত্য জেলা (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান) পরিষদ পরিচালনার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর/২৪ ইং তারিখ পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী মোহাম্মদ চাহেল তস্তুরীর স্বাক্ষরিত আদেশে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়। তবে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের আর্থিক কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।
আদেশে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত সরকারের ২৮টি বিভাগের প্রশাসনিক কাজ পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। তাদের দেয়া হয়নি আর্থিক ক্ষমতা। আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদ সমুহের উন্নয়ন কাজ এর বিল পরিশোধ করতে পারছেন না। সাথে জনসেবা মূলক সকল ধরনের কাজে হাত দিতে পারছেন না মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা।
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ কাছে হস্তান্তরিত বিভাগগুলো নিয়মিত কার্যক্রম থেমে গেছে। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং হস্তান্তরিত বিভাগগুলিতে একধরনের বন্ধ্যাত্ব বিরাজ করছে। এ কারণে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সাথে সাথে আর্থিক ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন।
গত ৫ আগস্ট থেকে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে না পারায় জেলা পরিষদের পাশাপাশি হস্তান্তরিত বিভাগের প্রশাসনিক কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিউল হক ছিদ্দিকী বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কাজ চালানোর জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের একটি অন্তর্বতীকালীন আদেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের পুনর্গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জেলা পরিষদ শাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা গত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইংরেজি তারিখ স্মারক নং : ৪৬, ০৪২, ০৩৩, ০০, ০০, ১৮৭, ২০১১, ১৪৪৫ মুলে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪”-এর ধারা ৩ দ্বারা সন্নিবেশিত ৮২ (২) ধারা মোতাবেক প্রশাসক, জেলা পরিষদ-এর কর্মসম্পাদনে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নিন্মরূপভাবে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
প্রশাসক, জেলা পরিষদ, সভাপতি, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, উপ-পরিচালক, সমাজসেবা, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, জেলা শিক্ষা অফিসার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, উপ-পরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট জেলা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলাসদস্য, নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল) সদস্য, সহকারী প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য-সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিঃ (ক) কমিটির সদস্যগণ জেলা পরিষদ সদস্যের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।
(খ) জেলা পরিষদের অধিক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উক্ত কমিটির সুপারিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
(গ) ন্যুনতম ৫০% সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম গঠিত হবে; যদি কোন সভায় কোরাম না হয়, তাহলে ঐ সভার সভাপতি এরূপ সভা মূলতবী করবেন অথবা যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রয়োজনীয় কোরাম হলে সভা পরিচালনা করবেন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে, উপসচিব মোঃ হাবিবুর রহমান এই আদেশে স্বাক্ষর করেন। জেলা পরিষদ সমুহের প্রশাসক নিয়োগ এর বিষয়কে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারন জনগণ।
আন্তবর্তীকালিন সরকার দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের সাথে মিল রেখে তিন পার্বত্য জেলা (খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান) পরিষদ পরিচালনার সঠিক কৌশল বলে মতামত দিয়েছেন পার্বত্য জেলার স্থানীয় বিজ্ঞজনরা।