আমির হোসেন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুমারখালি মরা নদী ও নদী সংলগ্ন খালের মুখে বাধ দিয়ে অবৈধভাবে দখলের প্রতিবাদে বাধ অপসারণ ও লিজ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কান্ডপাশা,নরউত্তমপুর, কুমারখালি সহ চার গ্রামের তিন শতাধিক মানুষ।
সোমবার (২৫ ননভেম্বর ২০২৪) সকালে( ১০টায়) নলছিটি- বরিশাল-সড়কের কান্ডপাশা কুমারখালী এলাকায় এ মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে কৃষক, জেলে, সমাজকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। এসময় বক্তব্য রাখেন মরা নদীতে থাকা কিছু জমির মালিক জাকির হোসেন,স্থানীয় সমাজকর্মী বালী তাইফুর রহমান তূর্য,কৃষক মাসুদ হোসেন,ইজিবাইক চালক নাঈম হোসেন,মনির হাওলাদার, আল আমিন জোমাদ্দার সহ স্থানীয় ও রেকর্ডীয় জমির মালিকরা।
এসময় বক্তারা বলেন, প্রভাবশালী একটি মহল দাবি করে আসছে সুগন্ধা নদী সংলগ্ন কুমারখালি মরা নদী ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল থেকে ১০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে তাদের দখলে নিয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী সুগন্ধা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত প্রায় ছয়টি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। এতে মরা নদীর সঙ্গে সংযোগ খালগুলোতে জোয়ার-ভাটার প্রবাহ না থাকায় খালের পানি নষ্ট হয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।আশেপাশের বাড়িঘরের নারী শিশুরা দৈনন্দিন ব্যবহারের পানি পাচ্ছে না।কয়েক হাজার হেক্টর কৃষি জমি অনাবাদি হয়ে পরেছে।এবং উন্মুক্ত নদী দখলের কারনে কয়েক শত জেলে পরিবার বেকার হয়ে অত্যন্ত দুর্দশায় পরে গেছেন।
কাগজে কলমে ১০৯ একর জলাভ‚মি লিজ নিলেও, ওই মহলটি ৩২০ একর জমি তাদের জবর দখলে রেখেছে।এবং আইন লংঘন করে অবৈধভাবে নদীতে বাধ দিয়েছে। তীরবর্তী ৪টি গ্রামের সাধারণ মানুষ ও জেলেদেরকে ওই নদী ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে ওই এলাকার শত শত মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
তারা আরও বলেন,এলাকার কৃষকরা তাদের জমি ঠিকভাবে চাষাবাদ করতে পারছেন না।বিশেষ করে ওই নদীর ওপর জীবিকা নির্ভরশীল জেলেরা মৎস্য আহরণ করতে না পারায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বিগত সরকারের আমলে ওই মহলটি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হযরানি করাসহ তাদের মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছে। সম্প্রতি এলাকাবাসী তাদের এ জবর দখলের প্রতিবাদ করলে ফের ওই মহলটি এলাকার ১২ জন ব্যক্তির নামে ঝালকাঠির (নলছিটি)সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ৩ সেপ্টেম্বর,২০২৪ একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।ঝালকাঠি পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে গত ১৯ নভেম্বর লিজ গ্রহিতাকে অবৈধভাবে বাধ নির্মাণ বন্ধ করে জলাধারের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে বাধ কেটে দিতে চিঠি প্রদান করলেও তারা তাতে কর্নপাত করেনি।
বক্তারা কুমারখালি মরা নদী রক্ষায় লিজ বাতিল করে এলাকাবাসীর জন্য উম্মুক্তকরণসহ সকল বাধ অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।