DoinikAstha Epaper Version
ঢাকাবুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ঢাকাবুধবার ৫ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রমাণের আগে অপরাধী সাব্যস্ত করা নিয়ে কোরআন-হাদিসে যা আছে

Astha Desk
ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ ৯:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রমাণের আগে অপরাধী সাব্যস্ত করা নিয়ে কোরআন-হাদিসে যা আছে

ধর্ম ডেস্কঃ

ইসলামে প্রমাণবিহীন শাস্তি দেওয়া অন্যায়। যেকোনো অপরাধে সন্দেহ হলেই কাউকে অভিযুক্ত করা বা শাস্তি দেওয়া নিয়ে নবীজি উম্মতকে সতর্ক করেছেন। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যার জিনিস চুরি হয়, সে ধারণা ও অনুমান করতে করতে চোরের চেয়েও অগ্রসর হয়ে যায়।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৩০১)

ইসলাম চৌদ্দশ বছর আগে সন্দেহকে অন্যায় সাব্যস্ত করে সন্দেহ থেকে সৃষ্ট সব অন্যায়ের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। (সুরা হুজরাত: ১২)

রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মন্দ ধারণা পোষণ করা থেকে তোমরা দূরে থাকো। কেননা, মন্দ ধারণা হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা।’ (তিরমিজি: ১৯৮৮) রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেছেন- ‘সব শোনা কথা প্রচার ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (সুনানে আবি দাউদ: ৪৯৯২)

অতএব, প্রমাণের আগে কাউকে অপরাধী বলা যাবে না এবং এ বিষয়ে কাউকে পাকড়াও করা যাবে না। এর ফল খুব খারাপ হতে পারে। তাই তো আল্লাহ তাআলা মুমিনদের সতর্ক করে বলেন, হে ঈমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা তা যাচাই করে নাও। এ আশঙ্কায় যে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সুরা হুজরাত: ৬)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তরের প্রতিটির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩৬)

প্রমাণ ছাড়া কাউকে অপরাধী বলা, অনুমানের ওপর ভিত্তি করে কোনো ব্যক্তির সম্মানহানি করা এবং অপবাদে জর্জরিত করা মিথ্যাচার ছাড়া অন্যকিছু নয়। বিশেষ করে কোনো চরিত্রবান নারীর চরিত্রহনন করে অপবাদ দিলে ইসলাম তাকে শাস্তির আওতায় আনতে বলেছে। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা সচ্চরিত্রবান-সরলমনা মুমিন নারীদের ব্যভিচারের অপবাদ দেয়, তারা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য (আখেরাতে) রয়েছে মহাশাস্তি।’ (সুরা নুর: ২৩)

আরো পড়ুন :  ধামইরহাটে তিন বছর ধরে ভিক্ষুকদের জন্য গরু-খাসির ভোজ, ব্যতিক্রমী উদ্যোগ মানবসেবার

আসলে শয়তান মানুষকে প্রবৃত্তির অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করে। ফলে মানুষ সীমা লঙ্ঘন করে বসে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করতে চান, আর যারা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করে তারা চায় যে তোমরা ভীষণভাবে পথচ্যুত হও। আল্লাহ তোমাদের ভার লঘু করতে চান। কেননা মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বলরূপে।’ (সুরা নিসা: ২৭-২৮)

অতএব অপরাধী সাব্যস্ত করা বা শাস্তি দেয়ার আগে প্রমাণ লাগবে। কোনো অপরাধ অথবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিচারকাজ সম্পাদন করার জন্য ইসলাম উক্ত বিষয়ে নিশ্চিত হতে সাক্ষীর ব্যবস্থা করেছে। কোনোক্ষেত্রে এক, দুই বা তিনজন সাক্ষী নির্ধারণ করেছে। ব্যভিচারের ক্ষেত্রে চারজন সাক্ষীর শর্তরোপ করা হয়েছে। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য হতে চারজন সাক্ষী তলব করো।’ (সূরা নিসা: ১৫)

সুতরাং মুসলমানের দায়িত্ব হলো, কারো ব্যাপারে সন্দেহ হলে হুটহাট সিদ্ধান্ত কিংবা আতঙ্ক না ছড়িয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবগত করা। কর্তৃপক্ষই তদন্ত করবে বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। নিজের অজান্তে যেন নিজের ও মানুষের ক্ষতি না করি সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
সেহরির শেষ সময় - ভোর ৫:১৯
ইফতার শুরু - সন্ধ্যা ৫:৫১
  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৪
  • ১২:১৬
  • ৪:১১
  • ৫:৫১
  • ৭:০৬
  • ৬:৩৭