সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) মো. শাহেদুল কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) তদন্তের কাজে সিলেট আসছেন বলে জানিয়েছেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সালেহ আহমেদ।
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন
তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা সিলেট অবস্থান করে ঘটনার সব বিষয়েই তদন্ত করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে এমসি কলেজ বন্ধের মধ্যেও ছাত্রাবাস খোলা রেখে শিক্ষার্থীদের থাকতে দেয়া নিয়ে কলেজ প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বামীর কাছ থেকে ওই গৃহবধূকে জোর করে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের সামনে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় কলেজের সামনে তার স্বামীকে আটকে রাখে দু’জন।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। মামলায় ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করা হয়। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় গত রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার কাছে সেই রাতের ঘটনার জবানবন্দি দেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। এ সময় তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। আদালত গৃহবধূর জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেন।
চাঞ্চল্যকর এই মামলায় এখন পর্যন্ত এজাহারনামীয় পাঁচ আসামিসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে সিলেট রেঞ্জ পুলিশ ও র্যাব-৯। এদের মধ্যে ছয়জনের পাঁচদিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
এরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, চার নম্বর আসামি অর্জুন লস্কর ও পাঁচ নম্বর আসামি মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল হাসান, এজাহারভুক্ত আসামি মাহবুবুর রহমান রনি, সন্দেহভাজন আসামি রাজন ও আইনুদ্দিন।