কিশোরগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ, আতঙ্কে ভুক্তভোগী পরিবার
- আপডেট সময় : ১১:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
- / ১২২০ বার পড়া হয়েছে
কিশোরগঞ্জে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়াকে কেন্দ্র করে জমি দখলের চেষ্টা ও নানা হয়রানির অভিযোগ উঠেছে পৌর বিএনপির ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে শহরের গাইটাল ফার্মের মোড়ে সাবেক জেলা বিএনপির সদস্য নূর মোহাম্মদ আতাউল হক তানভীরের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক প্রয়োজনে তানভীর রুবেলের নানুর কাছ থেকে সুদের ওপর পাঁচ লাখ টাকা ধার নেন। গত নয় মাস ধরে নিয়মিত ৪০ হাজার টাকা সুদ পরিশোধ করলেও সম্প্রতি তা পরিশোধে ব্যর্থ হন তিনি। এর জের ধরে শুক্রবার রাতে রুবেল হোসেন তার দলবল নিয়ে তানভীরের বাড়ির দেয়াল ভেঙে জমি দখলের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দখল প্রক্রিয়া থেমে যায়। এ বিষয়ে নূর মোহাম্মদ আতাউল হক তানভীর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুবেল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পারিবারিক জমি দখলের ষড়যন্ত্র করে আসছে। সে বারবার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমাদের হয়রানি করছে। গত মাসে এক সালিশ বৈঠকের সময় রুবেল প্রকাশ্যে তাকে জীবননাশের হুমকি দেন। এর আগেও কয়েক দফায় তার বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগকারীর দাবি। যেকোনো মুহূর্তে রুবেল ও তার অনুসারীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালাতে পারে। জমি দখলের জন্য ইতোমধ্যেই কয়েক দফা চুক্তির ফাঁদ পেতেছে তারা। এতে আমাদের পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।”
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলতে অনেকে ভীত। তবে তার বিরুদ্ধে ‘চাপ সৃষ্টি করে জমি দখল ও সুদের টাকা আদায়ের চেষ্টা’ নিয়ে এলাকাজুড়ে নানা আলোচনা চলছে। ফার্মের মোড় ও আশপাশের এলাকায় সুদের টাকার লেনদেন একটি অপ্রকাশিত মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক সংকটে পড়া অনেক মানুষ সহজে টাকা পেতে সুদের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছেন। পরে সুদ শোধ করতে না পেরে জমি-বাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকে।
পৌর বিএনপি’র সভাপতি আমিনুল ইসলাম আশফাক বলেন, আমি ক্লিয়ার বলছি শুধু রুবেল না এর চেয়ে বড়ও যদি কেউ হয় আমি কোনো দিন এটা মেনে নিবোনা, এ ধরনের অপকর্ম করে বেড়াবে আর দল দায়দায়িত্ব নিবে। আমি তাৎক্ষণিক আমার সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সাহেবের সাথে কথা বলছি তিনি আমাকে সিরিয়াসলি জানিয়েছেন এই ধরনের দখলদারি বদ্রাস করা হবে না আমিও উনার সাথে একমত, বিষয়টা আমি কিশোরগঞ্জ সদর থানার ওসি সাহেব কে বলেছি এই দায়দায়িত্ব আমার না, যে অন্যায় করবে তার প্রতিফলন সে পাবে, আমি কোনো ভাবেই এটার পক্ষে না।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমি রুবেলের নানুর কাছ থেকে জেনেছি। তিনি জানিয়েছেন, তানভীর তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে এখন ফেরত দেয়নি। পরে রুবেল আমার কাছে আসছিলো আমি তাদেরকে বলেছি, সন্ধ্যায় বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেব। তবে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বিএনপির নাম ব্যবহার করে কেউ কোনো ধরনের জায়গা দখল করতে পারবে না।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুবেল হোসেন বলেন,তানভীর ভাই আমার এলাকার বড় ভাই। তিনি আমার নানুর কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা নিয়েছেন। আমি কোনো জায়গা জবরদখল করিনি। বরং তিনিই আমাকে বলেছেন, ওই জায়গার বাউন্ডারি ভেঙে দোকান ঘর নির্মাণ করতে। শর্ত ছিল যখন তিনি আমাকে টাকা ফেরত দিতে পারবেন, তখন আমি জায়গাটি ছেড়ে দেব। সেই অনুযায়ী আমি দোকানে কাজ করছি। বিষয়টি এলাকার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তানভীর ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




















