নওগাঁয় জাহিদুল ইসলাম (৪১) নামে এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাতভর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে আটক করা হয়। নিহত জাহিদুল ইসলাম পত্নীতলা উপজেলার কোতালী গ্রামের মৃত অছিমুদ্দিনের ছেলে ।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মো. সফিউল সারোয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জাহিদুলকে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ নীল পলিথিনে মোড়িয়ে মহাদেবপুর উপজেলার রাইগা ইউনিয়নের কালনা মৌজার আরমান সরদারের জমির পাশে একটি কালভার্টের নিচে ফেলে রাখা হয়।
ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী মোছা. নাসিমা খাতুন (৩৭) মহাদেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও প্রথমে কোনো সুনির্দিষ্ট ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। পরবর্তীতে এএসপি জয়ব্রত পালের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের কোতালী গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঐ গ্রামের গ্রামের গুলজার হোসেনের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩৬), মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২৫) এবং আবুল কালাম আজাদের ছেলে মো. রাজু হাসান (৩২)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ব শত্রুতা এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
হত্যার পর আসামিরা মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে পত্নীতলা থেকে একটি অটো চার্জার ভ্যানে করে মহাদেবপুরে নিয়ে আসে। পরে আলামত নষ্ট করতে জাহিদুলের মোটরসাইকেল মহাদেবপুরের ধনজৈল গ্রামের একটি মাঠে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে মোট পাঁচজন জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অটো চার্জার ভ্যানটিও উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান এবং বাকি দুই আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, ফারজানা হোসেন এবং মহাদেবপুর থানার ওসি হাসমত আলীসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমকে/আস্থা