ক্ষমতার মুখোশে ঢেকে যাচ্ছে পাহাড়ের সত্য, নীরবতায় ডুবে যাচ্ছে মানবতা।
মগের মুল্লুক যেন পার্বত্য চট্টগ্রাম
- আপডেট সময় : ১২:৩৩:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৫৯৪৬ বার পড়া হয়েছে
পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন এখন আর বাংলাদেশের অংশ নয়, মনে হয় এক অদ্ভুত মগের মুল্লুক। যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, অথচ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলে না কেউ। একটা মিথ্যা ধর্ষণ নাটক দিয়ে পাহাড় উত্তপ্ত করা হয়েছিল, তারপর গুইমারায় সংঘর্ষ ঘটানো হলো।
এতে প্রাণ হারাল তিনজন মারমা যুবক।
কিন্তু ঘটনা ঘটার কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল লিখে ফেলল—‘সেনাবাহিনীর গুলিতে তিন মারমা যুবক নিহত’।
এটাই আজকের সাংবাদিকতার ভয়ংকর রূপ।
সেনার গুলিতে নয়, অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষেই নিহত তিনজন
স্থানীয় প্রশাসন, প্রত্যক্ষদর্শী ও জনপ্রতিনিধিদের তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনী তখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সংঘর্ষ থামাতে।
এর আগেই মৃতদেহ পড়ে ছিল।
অর্থাৎ সেনাবাহিনীর গুলিতে নয়, বরং নাশতার আয়োজন ঘিরে যে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, সেখানে নিহত হয় তিনজন মারমা যুবক।
এ সত্যটি প্রশাসনের রিপোর্টেও স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।তবুও কিছু গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃতভাবে সেনাবাহিনীর ওপর দায় চাপিয়ে দেয়। এ যেন পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা।
মিথ্যা নিউজের নেপথ্যে কারা?
তথ্য বলছে, পাহাড়ের কিছু তথাকথিত উপজাতি সাংবাদিক ও বিদেশি অর্থপুষ্ট অনলাইন মিডিয়া দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
তাদের সঙ্গে যোগসাজশে আছে ইউপিডিএফ ও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার দালালরা।
লক্ষ্য একটাই—বাংলাদেশের পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী সরিয়ে দেওয়া।
কারণ সেনা থাকলে তাদের চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়।
তারা চায় পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা ফিরুক, যেন বিদেশি মদদে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি আবার মাথা তোলে।
খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের মানববন্ধন নিউজে গোপন ষড়যন্ত্র
গতকাল খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিকদের মানববন্ধনের একটি নিউজে মাঝখানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় একটি বাক্য—
‘খাগড়াছড়ির সহিংসতায় সেনাবাহিনীর গুলিতে তিন মারমা যুবক নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ।’
এমন সংবেদনশীল ও ভিত্তিহীন তথ্য ঢুকিয়ে দেওয়া কি অনিচ্ছাকৃত ভুল, নাকি মোটা অংকের বিনিময়ে ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্র—এই প্রশ্ন এখন সাংবাদিক সমাজের মুখে মুখে।
যেখানে মানববন্ধনের মূল উদ্দেশ্য ছিল সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দাবি, সেখানে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুজব ঢোকানো মানে হলো রাষ্ট্রকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।
এমনকি সরকারি নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল ‘আওয়ার নিউজ বিডি’-তেও একই ধরনের ভুল তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
তারা লিখেছে—‘সেনাবাহিনীর গুলিতে তিন মারমা যুবক নিহত’।
প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতিনিধির পাঠানো নিউজ কি কেউ যাচাই করেনি?
নাকি সম্পাদকও জানতেন তথ্য ভুল, তারপরও প্রকাশ করেছেন?
যদি ইচ্ছাকৃত হয়ে থাকে, তাহলে এর পেছনে কী স্বার্থ বা আর্থিক লেনদেন রয়েছে, তা তদন্ত করা জরুরি।
সেনা হটাও নয়, সন্ত্রাস হটাও
১৯৯৭ সালের শান্তিচুক্তির পর সেনা ক্যাম্প কমানো হয়েছিল।
তারপরই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ইউপিডিএফ ও জেএসএসের সন্ত্রাসীরা।
চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন—সবই বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
সেনা কমলেই পাহাড়ে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ে, এটি বারবার প্রমাণিত সত্য।
পাহাড়ে সেনা থাকা মানে ব্যবসা-বাণিজ্য নিরাপদ, শিক্ষার্থীরা নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারে, আর জনগণ শান্তিতে ঘুমাতে পারে।
তাই সেনা হটাও নয়, সন্ত্রাস হটাও—এটাই সময়ের দাবি।
রাষ্ট্রবিরোধী সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
যারা ব্যক্তিগত স্বার্থ বা বিদেশি অর্থে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছেন, তাদের জাতি ক্ষমা করবে না।
রাষ্ট্রের নিরাপত্তাবাহিনীকে দুর্বল করা মানে রাষ্ট্রকে দুর্বল করা।
সরকারকে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট ক্রাইম রিপোর্টার ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করছে।
সংগঠনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম এইচ মানিক বলেন,
“যারা টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন, তারা জাতির শত্রু। রাষ্ট্রকে শক্ত হাতে তাদের মোকাবিলা করতে হবে।”
পাহাড়ে সেনা মানে শান্তি, সেনা না থাকলে ভয় আর সন্ত্রাস।
যারা সেনাবাহিনীকে অপমান করে, তারা আসলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে।
তাদের মুখোশ এখনই উন্মোচন করতে হবে।
সেনা হটাও নয়, সন্ত্রাস হটাও—এটাই হোক জাতির শ্লোগান।
সূত্র : পার্বত্য কন্ঠ