কানাডা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকার জড়িত বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা। তবে ট্রুডোর এই দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ অভিহিত করেছে ভারত।
এ ঘটনার জেরে ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে কানাডা। পাল্টা জবাবে কানাডার এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে দিল্লি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারত। ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন বেশ নাজুক। কিন্তু কে এই হরদীপ সিং? যাকে ঘিরে ভারত-কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন তুঙ্গে। সূত্র-গ্লোবাল নিউজ।
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে হরদীপকে হত্যার আগে বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বার্নাবির স্পাইস রেডিও ১২০০-এএমের সঙ্গে গত ১৮ মে একটি সাক্ষাৎকারেও হরদীপ এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন।
এরপরই গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় একটি শিখ উপাসনালয়ের বাইরে গুলি করে হত্যা করা হয় নিজারকে। ভ্যাঙ্কুভার থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্বে সারে শহরে গুরু নানক শিখ গুরুদুয়ারার গাড়ি পার্কিংয়ে নিজের গাড়িতে বসা নিজারকে গুলি করে হত্যা করে মুখোশ পরা দুই বন্দুকধারী।
ট্রুডোর প্রতিক্রিয়া
সম্প্রতি জি-২০ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন ট্রুডো। এরই ধারাবিহিকতায় গতকাল সোমবার হাউস অব কমনসে বক্তৃতার সময় ট্রুডো বলেন, ‘কানাডার মাটিতে একজন কানাডীয় নাগরিককে হত্যার সঙ্গে বিদেশি সরকারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন, যা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। এমন ঘটনা মুক্ত, স্বাধীন এবং গণতান্ত্রিক সমাজের পরিপন্থী।
কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্ক অটোয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, কুইবেক কোর্ট অব আপিলের বিচারপতি মেরি-জোসি হোগ এ ঘটনায় তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি প্রাপ্ত আলামত অনুযায়ীই কাজ করবেন। এখানে নতুন উত্থাপিত গোয়েন্দা তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এদিকে এক বিবৃতিতে ‘শিখস ফর জাস্টিস’ কানাডায় ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মাকে বহিষ্কারের জন্য ট্রুডোকে অনুরোধ করেছে। এ মানবাধিকার সংগঠন খালিস্তানকে সমর্থন করে। এ বিষয়ে অটোয়াতে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেট মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। সূত্র-গ্লোবাল নিউজ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ এর দশকে খালিস্তান আন্দোলন গণমাধ্যমে আসে, তবে শিখ এবং পাঞ্জাবের সার্বভৌমত্বের দাবির সূচনা হয় ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের সময়। কিন্তু ভারতে শিখদের এই আন্দোলনকে দমন করা হয়। শিখ সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দেওয়া হয়। ফলে ১৯৯৭ সালে কানাডায় পাড়ি জমান তিনি।